এপ্রিল ফুল অথবা এপ্রিল ফ্রানক

১৪৯২ খৃঃ পহেলা এপ্রিল বিশ্ব মুসলিমের জন্য এক মর্মান্তিক দিবস। ১৪৬৯ খৃঃ এরাগন রাজ ফার্ডিনান্ড এবং ক্যাষ্টাইলের রানী ইসাবেলার পরিনয়ের পর স্পেনে খৃষ্টানগন শক্তিশালী হতে থাকে। মুসলিমদের মধ্যে দেখা দেয় বিশ্বাসঘাতকা, সৃষ্টি হয় আত্বঘাতী ভ্রাতৃযুদ্ধ ও খ্রীষ্টানদের সাথে বন্ধুত্ব। কর্ডভা, সেভিল, ভেলেলিয়া ইত্যাদি পতনের পর সম্মিলিত খ্রীষ্টান শক্তি মুসলিম সভ্যতার জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্রস্থল গ্রানাডা রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। গ্রানাডার শেষ রাজা আবুল হাসানের পুত্র আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ (বুয়াবদিল নামে কুখ্যাত) এক যুদ্ধে বন্দী হয়ে ফার্ডিনান্ডের প্রতারনায় তারই সংগে যোগ দিয়ে পিতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে এবং ফার্ডিনান্ড ইসাবেলা বন্ধুরাজ হিসেবে ৩রা জানুয়ারী ১৪৯২/ ২রা রবিউল আউওয়াল ৮৯৭ হিঃ গ্রানাডা দখল করে ফার্ডিনান্ডের হাতে তুলে দেয়। এ কাজে তাকে সাহায্য করেছিল তার মা আয়েশা। স্ত্রী ও সন্তানের বিশ্বাসঘাতকতায় পরাজিত গ্রানাডারাজ আবু হাসান ভ্রাতা আল জাগাল এর পক্ষে সিংহাসন ও রাজ্য ত্যাগ করেন। গ্রানাডা পতনের পর বিশ্বাসঘাতক বুয়াবদিলের মীরজাফরের ন্যায় পুতুল নবাব হওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। বৃত্তিভোগি হিসাবে সে বিতাড়িত হয়। কিন্তু খ্রীষ্টন্দের বিরুদ্ধে এলাকা ভিত্তিক বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত যুদ্ধ চলতে থাকে। বিজয়ী ফার্ডিনান্ড ঘোষনা করেন যে, দেশের মুসলিমগন অস্ত্র ত্যাগ করে ১লা এপ্রিল (১৪৯২) মসজিদে আশ্রয় নিলে ক্ষমা প্রাপ্ত হবে ও অত্যাচারিত হবে না। মসজিদে মসজিদে আশ্রয় গ্রহনকারী নিরস্ত্র প্রতারিত মুসলিমদের উপর সারাদেশে পরিকল্পিত হামলা শুরু হয়। মসজিদ গুলোতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আক্রমনে প্রায় ৭ লক্ষ মুসলিম নরনারী ও শিশু হত্যা করা হয়। অবশিষ্টরা ধর্মান্তরিত হয়ে আত্বরক্ষা করে। এ হত্যাকান্ড যদিও গ্রানাডার বড় মসজিদে কামান দাগিয়ে, অগ্নিসংযোগে ১লা এপ্রিল ১৪৯২ সালে শুরু হয়েছিল, একই নীতি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে স্পেনের অন্যান্য শহরে ও জনপদে অনুষ্টিত হয়।

মুসলিমদের সাথে এ প্রতারনার স্মৃতি হিসাবে প্রাশ্চাত্যে আনন্দ দিবস হিসেবে ‘এপ্রিল ফুল’ পালিত হয়। ইদানীংকালে এটি এপ্রিল ফ্রানক হিসেবেও ব্যপকভাবে পালিত হচ্ছে.

বিশ্বাসহীন বিশ্বাসী

মাজে মাজে ভাবি, আসলেই কি কেউ ‘প্রকৃতিগতভাবে অবিশ্বাসী’ হতে পারে? আর যদি কেউ হয়েও থাকে, সেটা কিভাবে বাস্তব সম্মত? ধর্মের বর্ণিত সৃষ্টিকর্তা ধারণার সাথে নিজে কেউ ভিন্নতর মত পোষণ করতে পারে কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ধারণার সাথে যে অদৃশ্য শক্তির সহাবস্থান, তা অস্বীকার করার মত জ্ঞানী বা যুক্তিবাদী কেউ আছে বলে আমার মনে হয় না।
আমার প্রিয় একজন কাষ্টমার, রক এন্ড রল আইডল, টপ টু বটম। যার দাড়ি নেমে পেঠের নিম্নাংশ পর্যন্ত প্রলম্বিত। সাধারণত আমার ধারনা ছিল যারা রক এন্ড রল টাইপ, প্রচন্ড শব্দের মোটর বাইক চালায় তারা রুক্ষ হয়, ব্যবহারে হয় আগ্রেসিভ। কিন্তু এই লোকটার সাথে পরিচয় হওয়ার পর আমার সে ধারণায় চির ধরেছে। সেই যাই হোক।
লোকটির সাথে আমার প্রায়শই ধর্ম সমাজ রাজনীতি নিয়ে কথা হয়। এমনকি বর্ণবাদ নিয়েও।( বলে রাখা ভাল, লোকটির অরিজিন সাউথ আফ্রিকা, এবং শ্বেতাঙ্গ।)
এই লোকটির সাথে যুক্তি তর্কের এক পর্যায়ে আমার নিজের নতুন এক উপলব্ধি জন্ম নিল? ঐ, আসলেই কি কেউ ‘পরম অবিশ্বাসী’ হতে পারে? না পারে না। সে যতই আধুনিক ধারণার সাথে পরিচিত হোক, বিজ্ঞানের চরম অনুগত হোক না কেন, তার দৈনিক জীবনের অধিকাংশ সময়ই কাটে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে।
আবার যদি বলা হয় বিশ্বাস আর আস্থা এক নয়, তবে সেটা ধরে নিয়েও কেই কি আস্থাহীন জীবন যাপন কিংবা ধারণ করতে পারে? অসম্ভব। 
এই যে রক এন্ড রোল মানুষটির কথা বলছি- সে যদিও প্রচলিত (সাধারণত খিশ্চিয়ান) ধর্মীয় স্রষ্টার ধারণার সাথে ভিন্নমত পোষন করে, কিন্তু একটি অদৃশ্য শক্তিতে সেও বিশ্বাস করে। না সেটি ‘ডেভিল ওয়ারশিপ’ নয়, প্রকৃত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সে সেই শক্তিকে বিনা প্রশ্নে মেনে নিতে নারাজ যেটাকে সে কখনো বলে ‘সেন্স’ কখনওবা আখ্যায়িত করে নলেজ হিসেবে।
আমরা, আমাদের জীবনটাই সম্পুর্ণ আস্থা বা বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল। চারপাশে যে দিকেই তাকাই, দেখি বিশ্বাস আর আস্থার উপস্থিতি। বিশ্বাস আর আস্থাহীন জীবন স্থবির।
হাইওয়েতে ৭০ – ৯০ মাইল গতিতে চলা হাজার হাজার মোটর বাহন চলে বিশ্বাস আর আস্থার উপর। হাজার ফুট উপর দিয়ে চলা বিমান থেকে শুরু করে সাগরে মাছ শিকারি ডিঙি নৌকার মানুষ গুলোর জীবনে দেখি সেই একই আস্থা আর বিশ্বাস। সুউচ্চ অট্টালিকা নির্মানে শত ফুট উচ্চতা থেকে শুরু করে খনির নীচে কাজ করা শ্রমিকরা প্রতিটি দিন শুরু হয় বিশ্বাস দিয়ে।
আর যে জটিল মনস্থাত্ত্বিক সম্পর্কে মানব জীবন গতিময় সেটিও সম্পুর্ণ আস্থা আর বিশ্বাস নির্ভর।
তবে কি করে কেউ দাবী করতে পারে, সে অবিশ্বাসী।
জাগতিক এই বিশ্বাস আর আস্থার গোলকে বন্ধী আমি আমরা হয়ত দ্বিধাগ্রস্ত, শংসিত কিন্তু অবিশ্বাসী? না, সেটি অসম্ভব। অবাস্তব; যদি না কেউ মানসিকভাবে অসুস্থ কিংবা অস্থিরতা দ্বারা প্রভাবিত।
বিশ্বাস আর আস্থার এই সীমাকে কেউ যদি নিয়ে যায় সীমাহীনতায়, অসীম কোন শক্তিতে- অবলীলায় বলা যায়- সে বিশ্বাস আর আস্থা জাগতিক বিশ্বাস আর আস্থার চেয়ে শ্রেয়তর- কিংবা বলা যায় ‘এডভাঞ্চারাস’।

End of The World, Two significant signs Told from Prophet Muhammad,PBUH

It has been a while I’ve thought to talk about the following.

It’s about the beloved Prophet #Muhammad, Peace be upon him.
People who are doubting on his Prophecy from Almighty God, should reconsider their views if they are honest enough.
If you go through many of his words, it will astonish you. No, I’m not going to deliver some ‘Islam & science’ mumble, rather, I would like to bring some practical truth of what the final Prophet of the earth has taught us.

First of all- the numbers of Muslims! Many of us already have read reports published last week from a USA university, that claims in 70 years Muslim’s will be majority in the world by the masses. This has already been described by the Prophet in His lifetime where few thousands of His followers were around Him. Nonetheless, most of us are happy after reading the report and exclaim with joy. However, I doubted on their honesty, because Prophet’s where mentioned with the increase of quantity of Muslim in different prospects. The Hadith (His words) was about among the signs of End the world. He also mentioned there will be days coming where Muslims will suffer from non-believers, they will be attacked the same as a wolf attacks a sheep folks. His companions asked Him, will it happen because of we are less than them. He replied, no, rather you shall be more than them. I think I’ve succeeded to clear my point. Lets get ready for final days of the earth, also, have preparation for more sufferings and oppression from the non-believers. 

If you’re still happy to read that report, my prayers towards to you.

Secondly, my actual topic to writing this status.
According to our Prophet, it has been told before of signs of doom’s day. Some are major and maximum, some are minor. On the minor signs, He speaks of mentions where there will be day’s coming when ‘Women will be unclad in spite of wearing dresses.’
Whenever I’ve read these words, I just become speechless. How could have he been able to say this. Then my heart blast with reciting this ‘there is only one God and certainly Muhammad His Last Messenger’.
Now, probably I wouldn’t know what is unclad if I hadn’t seen a specific type of dress girls & women even old crone wear these days. Remember it’s not nudity, or beach suite, rather something more that have become okay in societies everyday life. If He did mean it something like that, he would implied that same kind of words. Exposing women’s body wasn’t rare in his time. Even belly dance is almost a part of Arab traditions until today. So, certainly he didn’t mean it in that way.

I think, and I’m confident, He meant those dresses now a days very popular to girls and women.  I’m neither able to describe such unsuited dresses or how does it look when they wear it. People in western society have better experience with that than my weak words. In my view “leggings” are the worst article of clothing ever designed in human history.

So, how did the Messenger know today’s unfiltered fashion?

Yes, the only answer is, He is the Messenger of God, the almighty, to whom time is not bound at all. Thanks to The Almighty to allow me to prostrate Him and follow His last Messenger.

এথিষ্ট বনাম রিলিজিয়ন এবং কিছু বাস্তবতা

CNN’র Atheist: Inside the World of Believers’ ডুকুমেন্টারী নিয়ে টুইটার ফিডে প্রখ্যাত বায়োলজিষ্ট এবং এথিষ্ট রিচার্ড ডওকিন্সের মন্তব্য পরে অবাক হলাম।
সারা বিশ্বে এথিষ্টদের অন্যতম পুরোধা এই বিখ্যাত মানুষটিও এমন একটি খোঁড়া যুক্তি কিংবা কথা বলতে পারেন ভেবে বিশ্বাস করতে কষ্ট হল। শেষে ডওকিন্সের টুইটার ফিডে গিয়ে দেখি তিনিও ঐ বক্তব্যের ফ্লাশকার্ডটি রিটুইট করেছেন। তখন আর কোন সন্দেহ থাকল না, তারই বক্তব্য এটি।
তার সেই বক্তব্যটি কি ছিল?
তার কথাটি কোর্ট করে লিখছি -” The world would be a better place without religion’
কথাটি শ্রুতি মধুর। তাঁর সাথে সহমত পোষন করতাম যদি জানতে পারতাম- তিনি ‘Better Place’ বলতে কি বুজিয়েছেন? তাঁর সেই ‘Better Place’ কি ধরনের স্টান্ডার্ড রাখে। এমন না যে তিনি ধর্ম শাস্ত্রের ‘হেভেন’ থেকে তিনি বেটার প্লেইসের ধারণা পেয়েছেন।
তাহলে তাঁর এই ‘Better Place’র মাজেজা কি? এটা কি কেবল তাত্ত্বিক নাকি এর বাস্তবতা আছে? জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের চথোর্পাশ্বিক চাপে এবং কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে যদি এরকম একটা অদ্ভুত দাবী করে বসেন তাহলে বলার কিছুই থাকে না। কিন্তু তাঁর মতো ব্যক্তির এমন কাঁচা ভাবে বিভ্রান্ত হওয়া কি মানায়?
তাঁর অপর একটি কথাও কিন্তু তাঁর এই কথার সাথে খাপ খায় না। ঐ টুইট ফ্লাসেই কোর্ট করে বলছেন ‘Evidence is the only reasons to believe something’
এখন আমরা যদি তাঁর এই কথাকে সামনে রেখে পুর্বের ‘Better Place’ খুঁজতে যাই, তাহলে পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা কোন ‘Better Place’র evidence পাইনা। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে আজ পর্যন্ত, আমরা জানি, কোন কালই বেটার ছিল না। এর জন্য আমি ইতিহাস তুলে আনব না, আমার এ কথার পক্ষে ডারউইনের এভিলুশনের একটি তত্ত্বই যথেষ্ট! ডারউইনের তত্ত্বে বলা হচ্ছে ‘Survival of the Fittest’. যে ওয়ার্ল্ড এ মানুষ সহ সকল প্রানীকে অস্তিত্ব রক্ষার্থে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়, সেখানে কি ‘Better Place’র আশা করা যায়?
সুতরাং এ সকল অবাস্তব কথায় বাহবা পেলেও ‘Better world’ তৈরিতে সামান্যতম অবদান রাখে না।
এখানে অবশ্য একটি ফাঁক থেকেই যায়। স্রষ্টার অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় এবং রিলিজিয়ন এর বিরোধিতা সমার্থক নয়। স্রষ্টায় বিশ্বাসী একজন ব্যাক্তিও রিলিজিয়নের বিরোধিতা করতে পারেন। ধর্মীয় রীতিনীতি’র প্রতি অবজ্ঞা দেখাতে পারেন।
কিন্তু ডকিন্স’দের মত বড় মাপের বিজ্ঞানী এবং থিংকার  যখন রিলিজিয়নের বিরোধিতা করে এথিষ্ট হওয়ার দাবী করেন, তখন সেটা ঠিক মেনে নেওয়া যায় না।

আবার ডকিন্স’রা ওয়ার্ল্ডকে বেটার প্লেইস হিসেবে যখন রিলিজিয়নকে দায়ী করেন বা পরষ্পরকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে চান, আসলেই কি তারা ওয়ার্ল্ডকে বেটার প্লেইস হিসেবে দেখতে চান? সন্দেহটি এ কারনেই জাগে যে, তাদের কথা যদি মেনেও নেই, রিলিজিয়ন এই পৃথিবীকে বেটার প্লেইস হতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, তারপরও কথা  থেকে যায়। বর্তমান সময়ের কথাই যদি ধরি, আজকে যে এত অস্রের যোগান, অস্রের রমরমা ব্যবসা, এসব কোম্পানীগুলোর মালিক নিশ্চই ভ্যাটিকান পোপ ফ্রান্সিস নন। প্রধান প্রধান ব্যংকগুলোর মিলিয়ন পাউন্ড বেতন ও বোনাস পাওয়া কর্তাব্যক্তিরা নিশ্চয়ই চার্চের প্রিষ্ট বা ফাদার নয়। হুকার, প্রিস্টিটিউট হিসেবে প্রচন্ড টাণ্ডায় কোন নানকেও দেখি না দাঁড়িয়ে থাকতে। অথচ খবরে প্রকাশ সেই সকল সাধারণ মেয়েরাই আজকাল হুকার হিসেবে পার্ট টাইম জব বেছে নিচ্ছে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে বলে। ডকিন্সদের তো এসব নিয়ে কথা বলতে শুনি না।
ফ্যাশন বলি আর অবসেসন বলি, রিলিজিয়নের বিরোধিতার মাধ্যমে নিজেদের এথিষ্ট হিসেবে জানান দেওয়া অতি নিম্নমানের একটি প্রচেষ্টা। এতে  জ্ঞান বা প্রজ্ঞা, এমন কি বেটার Consciousness’র পরিচয় পাওয়া যায় না।
রিচার্ড ডিকিন্সদের জ্ঞান এবং প্রজ্ঞার এই ভঙ্গুরতা দেখে সত্যি অবাক লাগে!

টাওয়ার হেমলেট মেয়র নির্বাচন ও বাংলাদেশি রাজনীতি

চ্যানেল এস’ এর কোন এক অনুষ্টানে উনার একটি বক্তব্য শুনে বেশ ভালো লেগেছিল। তাঁর বক্তব্য ছিল অনেকটা এরকম- ‘প্লিজ বাংলাদেশের রাজনীতি এখানে আনবেন না, এখানে আমরা সবাই বাংলাদেশি। ব্রাভ, অজান্তেই মুখ থেকে বের হয়ে ছিল তখন।
কিন্ত আমার ব্রাভ শব্দ আমাকে যতটা না আলোড়িত করেছিল, আজ সেটি কয়েকগুণ বেশি ক্ষোভ আর বিস্ময়ের কারন।
হ্যাঁ, আমি বলছি ‘বাংলাদেশীদের অহংকার’ লন্ডনের টাওয়ার  হেমলেটের দুইবারের মেয়র লুৎফর রহমানের কথা।
গত মে’তে অনুষ্টিত মেয়র নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মেয়র হিসেবে তাঁর বিজয় প্রশ্নাতীত নয়। তাঁর নিজের এবং সমর্থক কর্মীদের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ড মারাত্বক কিছু অভিযোগের জন্ম দিয়েছে। বলা হচ্ছে এগুলো ব্রিটিশ নির্বাচন পলিসিকে ভায়োলেট করেছে। তাই তাঁর এ বিজয় যতটা না সম্মান বা তৃপ্তির তার চেয়ে অনেক বেশী মাথা ব্যাথার কারন; লজ্জার বিষয়টা আর নাই বা আনলাম। এখন তিনি ‘Electoral fraud trial’ এর মুখোমুখি হয়ে লন্ডন হাইকোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন!
যেসকল অভিযোগ হয়েছে সেগুলোর বিস্তারিত তালিকা বেশ জটিল তবে সহজে বোজার জন্য যা বলতে পারি তা হচ্ছে- তিনি তার নেটিব বাংলাদেশি রাজনীতির পুর্ন ব্যবহার করে দেখিয়েছেন বাংলাদেশি রাজনীতি কি জিনিস! টাইমসের ফিচার কলামে ইনভার্টেড কমা দিয়ে যখন ‘Bangladeshi Politics’ শব্দ কে তুলে ধরে তখন বুজতে হবে সেটি কতটা গুরুত্ব বহন করে। ভয় দেখানো, ধর্মীয় প্রভাব কাটানো এবং সেই ‘মাগনা খানি’ তো ছিলই। যে পোষ্টাল ভোট বৃটেনের ইলেকশন সিস্টেমের অন্যতম বৈশিষ্ট, সেটিরও অপব্যবহার করা হয়েছে যা সত্যিই দু:খজনক।
তবে বলে রাখি, যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো এখনো আদালতের রায়ের অপেক্ষায়। এখনো প্রমানিত নয়। তবে আমার আপনার কিংবা স্থানীয় যারা দেখেছেন তাদের কাছে ব্যাপারটি অনেকটাই ‘যা রটে তা অল্প হলেও বটে’।
অনেকেই হয়ত পড়েছেন কিছুদিন আগে বৃটেনের এ বছর পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে একটি গুরুত্বপুর্ন রিপোর্ট। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে সকল এলাকার বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি অধিবাসী বেশি সে সকল এলাকায় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা সে সকল অঞ্চলে ইলেকশন মনুপুলেট/রিগিং হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। রিপোর্টি পড়ে নিজের বাংলাদেশি পরিচয়ে গর্বিত হব কিনা ভাবছিলাম। তার পর ভাবলাম এ আর এমন কি? বৃটেনবাসী হলেই যে পুর্ব পুরুষের ঐতিহ্য কেউ ভুলে যাবে তেমনটি আশা করা একটু বেশিই হয়ে যায়। বাংগালী জীন দ্ধারী হয়ে সে সকল জীনের কারেশমা এখানকার জনগনকে না দেখিয়ে উপায় আছে! বীর বাংগালী বলে কথা!
কি ‘বাংজ্ঞালিত্বে’ আঘাত লেগেছে নাকি? তবে আপনাদের জন্য একটা সুসংবাদ আছে।
এই যে মি: রাহমান কে নিয়ে এত কথাবার্তা, তার প্রথম পরিচয় কিন্তু বাংলাদেশি নয়, বরং মুসলিম! তাই পত্রিকায় হেডলাইনও এসেছে ‘মুসলিম মেয়র’ হিসেবে। যাক, ইজ্জৎ বাঁচল! তালি বাজান!
সত্যিই বলতে কি, বৃটেন বসবাসরত বাংলাদেশিরা এক ধরনের আইডেন্টিটি ক্রাইসের ভেতর যাচ্ছেন যা এখানকার মাথাওয়ালারা স্বীকার করতে চান না। (বিস্তারিত লিখব অন্য কোন লেখায়)
তাই এখানে বাংলাদেশির চেয়ে মুসলমান পরিচয় অনেক বেশি। যারা লুৎফর রহমানের বাংলাদেশি পরিচয়ে গর্ববোধ করেন, তাদের জানা উচিত এখানকার মিডিয়া এই বাংলাদেশি পরিচয়কে কিঞ্চিতও মুল্য দেয় না। কারন – তাতে ব্লেইমিং গেইম’ জমে না। বাংলাদেশি পরিচয়ের চেয়ে মুসলিম পরিচয় বেশি লোভ্য। নিউজের কাটতি বেশি। তাই টাওয়ার হেমলেট নির্বাচনের গত নির্বাচনের সকল অভিযোগ একজন মুসলিম মেয়রের উপর দিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশীর উপর দিয়ে নয়। কিন্তু আমরা যারা বুকের ভেতর বাংলাদেশি হিসেবে সামান্য পরিমান আত্বপরিচয় ধারন ও লালন করি, আমাদের একটুও কি লজ্জা দেবে না? পীড়া দেবে না- নিজের জন্মভূমির নাম বৃটেনের রাজনীতিতে যোগ করা নোংরা ফ্রড-রিগিং শব্দের সাথে দেখে?
পুনশ্চ, কেউ যেন আবার ভাববেন না, আমি এখানকার মিডিয়া দ্ধারা প্রভাবিত। বরং আমি এখনকার মিডিয়ার কানা চোখের সমালোচনা করি সব সময়। কিন্তু খবরের ভেতর থেকে আসল খবর বের করে আনার কৃতিত্ব আমার আছে। সুতরাং আমার এ লেখাকে বৃটিশ মিডিয়া দ্ধারা প্রভাবিত ভাবলে আমার প্রতি অবিচারের চেয়ে নিজেকে ঠকাবেন বেশি!
এখন দেখার অপেক্ষা, আদালত থেকে কি রায় আসে, যদিও বাংলাদেশি পরিচয়েরর ক্ষতি যা হবার ইতিমধ্যে তা হয়ে গেছে পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্টে।

নীচে টাইমসে প্রকাশিত রিপোর্ট (ছবি) সংযুক্ত করলাম।

image
টাইমের ২০ অগাষ্টে,২০১৪ এ প্রাকশিত সংখ্যার হেডলাইন
image
পুর্বের হেডলাইন রিপোর্টের শেষের অংশ
image
গত ৫ই ফেব্রুয়ারি,২০১৫-তে প্রকাশিত রিপোর্ট

image

আমি কি উন্নত সভ্যতার একজন গর্বিত নাগরিক?

যে প্রশ্নটি ইদানিং আমার মাথায় তিড়িংবিড়িং করে লাফাচ্ছে সেই প্রশ্নটি হচ্ছে; :আমি কি সত্যিই মানব সভ্যতার শ্রেষ্ট সময়ে বাস করছি?’

আমাদের চারপাশের যা ঘটছে, আমাদের চোখের আড়ালে, দুরে, আমাদের নিত্য দিনের ব্রেকিং নিউজ পুনরায় ভাবতে বাধ্য করে- আমরা কি আসলেই সভ্যতার উৎকর্ষে উপনীত হয়েছি? 

আদিম সমাজ বলে আমাদের আজকের তথাকথিত সভ্য সমাজ নাক সিটকালেও আদিমতাই বর্তমান সমাজের আষ্টে পৃষ্টে জড়িয়ে আছে। হয়ত মোড়াক কিছুটা জমকালো, বাহ্যিক প্রকাশ পৃথক কিন্তু মৌলিক যে বৈশিষ্ট্য, তাতে আমি সামন্যই পার্থক্য দেখতে পাই।

আদিম সমাজের মানব সভ্যতার কথা যদি বাদই দেই, এই যে আমরা কথায় কথায় মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঢেকুর তুলি, আসলে আমরা কতটা তৃপ্তি নিয়ে সেটা দেই, নাকি আমাদের বর্তমানকালীন অন্ধকার আর অসভ্যতাকে আড়াল করতে অতীতকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করি?

যদি তুলনা করি, কি কি বৈশিষ্টের মানদন্ডে আমরা অপেক্ষাকৃত সভ্য , তবে বেশ খানিকট ভাবনার বিষয় আছে।

আদিম যুগের মানুষ কাঁচা মাংস খেত, উলংগ হয়ে বসবাস করত, শিক্ষাদীক্ষার নাম গন্ধও ছিলনা, রোগে শোকে ভুগে জীবন অতিবাহিত করত।

হ্যাঁ, এসব কথা যেমন সত্য, তেমনি সেই একই বৈশিষ্ট্য কি বর্তমান মানব সভ্যতায় উপস্থিত নেই? আমাদের নিজেদের কর্মকান্ড জীবনাচার আমাদের কাছে এখন শোভনীয় মনে হচ্ছে বলেই যে আমরা উত্তম এমন আত্বপ্রবঞ্চক ধারনা সত্যিই দু:খজনক।

আজকের যান্ত্রিক সভ্যতা কিংবা আরো সহজ কথায়, প্রযুক্তির যুগে আমদের কে একটি শ্রেষ্ট শ্রেষ্ট ভাব এনে দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু এর অন্ধকার দিকটাও বিবেচনায় আনা প্রয়োজন।

যুদ্ধ বিগ্রহ যে কোন যুগ বা সভ্যতার অন্ধকার দিক, আজকে আমরা যুদ্ধ নয় শান্তি চাই বলে যতই চিৎকার চেচামেচি করি না কেন, এই সভ্য জগৎও কিন্তু যুদ্ধের আদিম কিংব মধ্যযুগীয় ঐতিহ্য থেকে নিজেকে আড়াল রাখতে পারছে না, যুদ্ধে কে নায়ক আর কে খল নায়ক সেটি বিবেচনায় না আনলেও শুধু এটুকু চিন্তায় আনলেই যথেষ্ট যে, এই যে কোটি কোটি টাকার অস্র নির্মান, পারমানবিক অস্রের মজুদ সেটি কি এমনি এমনিই প্রদর্শনীর জন্য? একবার কি চিন্তায় আসে না, আমার আপনার পোশাক নিত্য নতুন জিজাইনের মতই নিত্য নতুন মারনাস্ত্রের প্রটোটাইপ তৈরি হচ্ছে এবং অস্রের বাজারে দাম হাকানো হচ্ছে।

কোন ভিন দেশী শত্রুর জন্য নয়, এগুলো এই পৃথিবীর মানব মানবীর হত্যার জন্যই তৈরী করা হয়েছে এবং হচ্ছে, তারপরো যদি আমরা দাবী করি আমরা সভ্যতার উৎকর্ষে, তবে উপহাস করেই বলতে হয়, গ্রো আপ ম্যান! 

মানব সভ্যতাকে যদি পৃথিবীর একটি ক্ষুদ্র অংশের চাকচিক্য দিয়ে মান নির্ণয় করা হয় তবে সেটিও হবে মুর্খতা। 

যাই হোক এসব বিষয় নিয়ে অনেক গবেষকই ভিবিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করে সভ্যতার উচ্চ কিংবা নিম্ন মান নির্ধারণ করার প্রয়াস পাচ্ছেন, গবেষণাও প্রচুর হচ্ছে, এই ক্ষুদ্র লেখায় সেগুলো নিয়ে লেখাকে দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছি না।

আমি একটি ব্যাপারে বেশ সচেতন, মানব জীবনের অপ্রত্যাশিয় মৃত্যুর হার নিয়ে।
আমাদের বর্তমান চোখে যে যুগ গুলো ব্যকডেটেড, কালো, সেই সব যুগের অন্যতম বৈশিষ্ট হচ্ছে, মানব জীবনের মুল্যহীনতা বা অনর্থক অপচয়, সেটি রোগে হোক কিংবা যুদ্ধে। কিন্তু আমরা কি অস্বীকার করতে পারি আজকের এই সভ্য জগৎ এর থেকে ব্যতিক্রম নয়? খাদ্য – বস্ত্রের অভাবে মৃত্যু কি অনুপস্থিত আজকের সভ্য পৃথিবীতে? মানব জীবন আজও কি মুল্যহীন নয় বর্তমান সভ্য জগতে? 
বলা হয়ে থাকে রোগের মহামারীতে হাজার হাজার মানবের মৃত ছিল স্বাভাবিক, আজও কি সেটি সেই স্বাভাবিকতার উদাহরন নেই বর্তমান সভ্য জগতে? যে সভ্য জগতের বাসিন্দাদের অনেকেই জানে না ইবুলা কি কিংবা ইবুলা কি জিজ্ঞেস করলে বলে সেটি একটি পপ ব্যন্ড!
মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় বর্বরতায় হাজার হাজার মানবের মৃত্যুকে আজ অবিশ্বাস্য মনে হয়, কিন্ত সেদিন সেই সব মৃত্যুর জন্য প্রয়োজন ছিল যুদ্ধের, একটি প্রয়োজন সাপেক্ষ সময় সম্মুখ যুদ্ধ শেষে বিজয়ীরা হত্যা করত বিজিতদের, আজকের  সভ্যতায় শত শত মৃত্যুর জন্য সম্মুখ যুদ্ধের প্রয়োজনও পড়ে না, অপেক্ষাকৃত অনেক কম সময়ে হাজার হাজার – শত শত মানব মৃত্যু সম্ভব এবং সেটির প্রমান আমরা পেয়েছি জাপানের হির‍্যোসিমা আর নাগাসাকিতে এবং সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে যে কোন সময়। একদিকে মানবতা মানবতা বলে কিছু খেকশেঁয়াল হুক্কা হূয়া দিয়েই যাচ্ছে অন্যদিকে তারই জ্ঞাতি ভাই নির্মাণ আর আবিষ্কার করে যাচ্চে নিত্য নতুন ধ্বংসাত্মক অস্র? আমি কি বিশ্বাস করব এসব অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে ভিন গ্রহের কারো সাথে বা এগুলো ব্যবহার করা হবে এলিয়েনদের সাথে যুদ্ধ করতে?
ভাবতে অবাক লাগে, নিজেদের চারপাশে পারমানবিক বোমার মজুদ রেখে আমরা পৃথিবী ও এর মধ্যে বসবাসকারী প্রানীদের জীবন বিপন্ন বলে বলে আক্ষেপ করি। বর্তমানে ভিবিন্ন দেশে যত সংখ্যক এই পারমানবিক বোম আছে এর সিকি ভাগও যদি ব্যবহার করা হয় তাহলে পৃথিবীতে মানুষ কেন কোন প্রানীরই অস্তিত্ব থাকবে না, আর সেই আমরাই, উন্নত মানব সভ্যাতার অধিকারী যারা কিনা মানুষের বসবাস উপযোগী পৃথিবী নিশ্চিত করতে পুর্বের যে কোন সভ্যতার মানুষের চেয়ে বেশি অগ্রগামী, কি হাস্যকর! রোগ শোকে মানুষের মৃত্যু আজ যতটানা প্রাকৃতিক, তার চেয়ে বেশি মানবীয়, বেঁচে থাকা কিংবা না থাকাটা নির্ধারন করছে অল্প কিছু এলিট, তাদের ল্যবরটরিতে নির্ভর করছে পৃথিবীতে কারা বেঁচে থাকবে আর কারা থাকবে না, এটিই বাস্তব সত্য, এটিই সভ্য জগতের আসল পরিচয়।
আজকের সভ্য জগতে শত শত মৃত্যুর আরেকটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে বিমান দুর্ঘটনা, এটি আরো ভয়াবহ। পলকেই কিংবা মিনেটের ব্যবধানে শত শত মানব জীবন ইতি টানে আমরা এই 2014 সালেই এর প্রমান পেয়েছি, ইউক্রেনের উপর দিয়ে যাওয়া MH370 এর বিমান যাত্রীদের মৃত্যু, মালেশিয়ান এয়াল্লাইসেন্সের MH17, 242 জন যাত্রীর নিখোঁজ, এবং এই কিছুদিন আগে এয়ার এশিয়ার 139 জন যাত্রীর মৃত্যু।
মৃত্যু তো মৃত্যুই, সে যুদ্ধেই হোক আর বিমান দুর্ঘটনাজনিতই হোক, মাধ্যম ভিন্ন হতে পারে কিন্তু ফলাফল তো সে একই, নিরপরাধ মানব জীবনের অপ্রত্যাশিত মৃত্যু।
আদিমযুগ কিংবা মধ্যযুগ, মানব জীবনের অপ্রত্যাশিত মৃত্যর মাধ্যম ছিল সীমাবদ্ধ, কিন্তু আজকের সভ্য জগতে অপ্রতাশিত মৃত্যুর মাধ্যম অনেক অনেক বেশি, সুতরাং আমাকে যদি বিশ্বাস করতে বলা হয়, আমি মানব সভ্যতার সবচেয়ে উন্নত যুগে বাস করছি, তবে আমাকে সেটি মেনে নিতে হবে যে, আজকের সভ্য জগত বৈচিত্র্য আর চাকচিক্যে হয়ত পুর্ববর্তী যুগের তুলনায় অনেক আপডেটেড কিন্ত মৌলিকতায় সমান, বরং বলা যায় অনেক নিম্নে।

তাই, আমি নিজেকে মানব ইতিহাসের সর্বোচ্চ সভ্য জগতের নাগরিক হিসেবে মানতে রাজি নই, নিজের যেটুকু পরিশীলিত জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধি এখনো ধারণ করি, সেই বোধ থেকেই বলতে পারি, আমি এই তথাকথিত সভ্য জগতের বাসিন্দা হিসেবে গর্ববোধ করি না।

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব

হিন্দি ছবি PK এবং সৃষ্টিকর্তার একত্ববাদ

বেশ কিছুদিন আগে দেখা হয়েছিল হিন্দি ফিল্ম PK. ছবিটা যতটা না বিনোদনধর্মী তার চেয়ে বেশি তাত্ত্বিক। ধর্মীয় আচার, মন্দির আর পুরোহিত দ্ধারা সাধারনের ধর্মীয় বিশ্বাসের সুবিধাভোগীদের গালে বেশ বড় সর একটা চপেটাঘাত। আমার অনেকটাই বিশ্বাসের বাহিরে ছিল ভারতের মত ধর্মীয় আচার সর্বস্ব দেশে এরকম একটি ফিল্ম পর্দায় দেখানো হয়েছে। তার উপর প্রধান চরিত্র PK হিসেব যিনি অভিনয় করেছেন তিনি একজন মুসলমান। ধর্মীয় পুরোহিতরা ফিল্মটিকে হজম করতে দেখে বেশ অবাক লেগেছে। কোটি কোটি রুপি’র ব্যবসা যে মন্দির কে ঘিরে, সেই মন্দির ভক্তরা তুলনামূলক ভাবে কম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সেটা নির্ধিদায় বলা যায়। এটা অবশ্য ভাল লক্ষণ।
PK ফিল্মে যেটি মুখ্য হয়ে প্রদর্শিত হয়েছে সেটি হচ্ছে স্রষ্টার একত্ববাদ, যেটি ইসলামের মৌলিক শিক্ষা। ইসলামের এই একত্ববাদের কথাই আসলে এসেছে ফিল্মটিতে। যার কারনে ছবির ভিলেন ধর্মীয় গুরু PK’কে মুসলিম হিসবে ট্যাগ দিয়েছেন।
কিন্তু আমার কাছে যেটি দৃষ্টি কটু লেগেছে সেটি হচ্ছে হিন্দু খ্রীশ্চিয়ান ধর্মীয় অপ প্রথাকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, মুসলিম সমাজের মধ্যেকার অনেক অপপ্রথা বা অধর্মীয় অনাচারকে সেরকম ভাবে তুলে ধরা হয় নি। এটা কেন করা হয় নি, সেটি আমার বোধগম্য নয়। উত্তর হয়ত এমন হতে পারে যে, মুসলিম সমাজে অনেক অপ প্রথা থাকলেও সৃষ্টিকর্তার একত্ববাদের প্রতি কোন মুসলিমই অংশীদারিকে স্বীকার করে না, যদিও তারা ধর্মের নামে অনেক অপপ্রথা পালন করে।
কিন্তু এটি স্বীকার করে নিলেও পুরো ফিল্মে যে সকল বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, সে একই অপপ্রথা কিন্তু মুসলিমদের মধ্যে উপস্থিত। এখনো মুসলিম সমাজে মাজারকে ঘিরে যে সকল অপপ্রথা চালু আছে সেগুলো হিন্দু মন্দির বা দেবতা পুজার চেয়ে কম ঘৃণ্য নয়। লাল সালু ঠাংগিয়ে ব্যবসা তো মুসলিম সমাজের এক খুবই পরিচিত দৃশ্য। ভন্ড পীরদের দৌরাত্ম্য হিন্দু শ্রী গুরুদের চেয়েও অনেক নিম্নে। অথচ আমরা PK ফিল্মে সেই সকল দৃশ্যের দৃশ্যায়ন কম দেখি। আমার মনে হয় এখানে চাতুরীর আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।
আশা করি আগামীতে ‘PK-2’ তে (যদি নির্মান করা হয়) মুসলিম সমাজের মধ্যে প্রচলিত ভিবিন্ন অপপ্রথা গুলো আরো বেশি তুলে ধরে ধর্মীয় তাত্ত্বিকতার সামঞ্জস্য আনা হবে।

বন্দীদের উপর সি আই এ’র পাশবিকতা এবং আনী দেওয়ানীর খুন

আজকে, যদিও মুল খবর গতকালের। ভীষনভাবে নাড়া দিয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক,  এবং দ্বিতীয়টি প্রায় সেমি আন্তর্জাতিক,  প্রধানত বৃটেনীয়।
সবাই কম বেশি জেনে গেছেন,  আমেরিকা কি ধরনের বর্বর আচরন করেছে আটক অপরাধী (তাদের চোখে) প্রতি।
শারীরিক এমন কোন অত্যাচার নেই যা তারা করেনি।
২১ বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে ঘৃণিত সাক্ষর তারা রেখে গেল ইতিহাসের পাতায়।
না, আমি বলছি না, এগুলো নতুন, এর আগে কেউ করে নি কিংবা এখন আর কেউ করছে না। বরং মানুষের অমানুষী, পশু সুলভ চরিত্র আগেও ছিল। এখনো করছে অনেক দেশের সরকারী প্রতিষ্ঠান।
কিন্তু আমেরিকা’র ব্যাপারটা ভিন্ন।
এরা মানবতাবাদ কপচায়, যেখানে সেখানে বোমা মেরে গনতন্ত্র শেখায়, সাদ্দাম, গাদ্দাফী’দের খল নায়ক বানিয়ে নিজেদেরকে নায়ক হিসেবে তুলে ধরে, তাদের কাছ থেকে এরকম আচরন অল্প হলেও যে কোন মানবীয় অনুভূতি সম্পন্ন ব্যক্তিকে নাড়া দিতে বাধ্য।
কাজের চাপে আজকের পেপার গুলো পড়া হয় নি, শুধু হেডলাইন গুলোই পড়েছি। এখন বসে বসে পড়লাম। শরীরের লোম খাড়া হয়ে যায় সেগুলো পড়লে।
যাদেরকে তারা সন্দেহজনক হিসেবে আটক করেছে এবং যাদের প্রতি তাদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনেছে, সবার প্রতিই তারা করেছে বর্বরতা।
CIA ‘র এই পাশবিক অত্যাচারের বিবরণ সম্বলিত যে রিপোর্ট গত কাল প্রকাশ করেছে ওয়াট হাউজ, সে রিপোর্ট কিন্তু সম্পুর্ন না। যাদের ব্যাপারে তারা অত্যাচার করার প্রমাণাদি পেয়েছে, কেবল তাদের পরিসনখ্যানই এসেছে। প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক অনেক গুন বেশি। আরো বেশি বীভৎষ।
এবং সকল মিডিয়াই একটি ব্যাপার সুকৌশল এরিয়ে গেছে- যা তাদের শিরোনামে আনে নি। এই সব সকল আটক ব্যক্তিই কিন্তু মুসলিম।  সেটা পত্রিকার রিপোর্ট না পড়লে সহজে বুঝা মুসকিল।
আটক ব্যক্তিদের উপর যে সকল অত্যাচার ও অত্যাচারের উপায় নিয়েছে সেগুলো হচ্ছে-
* Frozen to Death
* shackled to the wall
* Rectal Feeding
* Waterboarding
* Chained to wall
* Sleep deprivation etc
এই প্রত্যকটি অত্যাচারের বিস্তারিত ব্যাখা আমার পক্ষে দেওয়া আপপত সম্ভব নয়, তবে গুগল করে জেনে নেওয়া যেতে পারে। যদিও অত্যাচারের শিরোনামই যে কাউকে শিউড়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
আরো উল্লেখ্য যে, সিনেটের যে কমিটি এই রিপোর্ট তৈরী করেছে, এর মধ্যে প্রায় ৬,৭০০ পৃষ্টার রিপোর্ট ক্লাসিফাইড হিসেবে অপ্রকাশিত রয়ে গেছে। ধারনা করা কি যায় না, উপরিউক্ত অত্যাচারের বাহিরেও আরো কত বেশি পাশবিকতা করা হয়েছে আটক ব্যক্তিদের উপর যা প্রকাশ করতে স্বয়ং সিনেট অপারগ!
একবিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত জাতি হিসেবে আমেরিকা তার স্থান করে নিল, তবুও তোমরা মোডারেট, ডেমোক্রেটিক, হিউমেনিষ্ট!
হায়, এই উপহাস আর কতদিন?
২:
দ্বিতীয় খবর হচ্ছে ২০১০ সালে বৃটেন দম্পত্তি আনী দেওয়ানীর সাউথ আফ্রিকায় হানিমুন করতে গিয়ে খুন হওয়ার রায়।
আনী দেওয়ানীর স্বামী, (বৃষ্টলের) মিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী শিরিন দেওয়ানী স্ত্রী’র খুনের সাথে সংলিষ্ট থাকার যথেষ্ট প্রমাণ থাকার পরও বেকুসুর খালাস পেয়েছে। অথচ যে ড্রাইভার এবং স্বামীর ভাড়া করা খুনি যার গুলিতে আনী খুন হয়েছে, তাদের শাস্তি হয়েছে ভিবিন্ন মেয়াদে! এটা কি টাকার জোড় নাকি বিচারের খর্ব হাতের স্বীমাবদ্ধতা?
যাই হোক, এই বিচার প্রকৃয়া অনেক নাটক, রিহার্সেল হয়েছে- এবং ফলাফল একপ্রকার শুন্যই বলা যায়
কিন্তু এদিকে মিডিয়া গুলো শিরিনের এই স্ত্রীকে হত্যা’র ঘটনা দিয়ে অন্য রকম রিপোর্ট বানিয়েছে। গতকাল স্কাই নিউজে দেখলাম প্রায় ১০ মিনিটের মত বিশেষ প্রতিবেদন।
সাউথ এশিয়ানদের সমকামী হওয়ার উপর।  রিপোর্টটি না দেখলে সত্যি বুঝানো মুসকিল আসলে তারা কি ম্যাসেজ দিচ্ছে।
কিন্তু আমার যা ধারণা হয়েছে সেট হচ্ছে-
সাউথ এশিয়ান ফ্যামিলিতে অনেকেই সমকামী। পারিবারিক ও ধর্মীয় কারনে তারা সেটি প্রকাশ করতে পারছে না। এমনকি সমকামী হওয়া সত্যেও পারিবারিক চাপের কারনে বিয়ে করতে হচ্ছে। যার ফলাফল আনী দেওয়ানীর খুন হওয়া।
এই সাউথ এশিয়ানদের মধ্যে গুরুত্ব পেয়েছে হিন্দু,  মুসলিম ও শিখ পরিবারগুলো। 
এরা বুঝাতে চাচ্ছে, সমকামী হওয়া মন্দ বা অস্বাভাবিক হওয়ার কিছুই নয়, সময় এসেছে সেটি মেনে নেওয়ার। হিন্দুদের মধ্যে থেকে সেটি মেনে নেওয়ার একটা ঝোক দেখা গেলেও মুসলিম পরিবার গুলো একদমই সাড়া দিচ্ছে না। তাদের মতে এটি ঠিক না।
তো, বৃটিশ মুসলিম পরিবার গুলো কি প্রস্তুত তাদের পরিবারের সমকামী সদস্যের বিকৃত রুচীকে মেনে নেওয়ার?
যদি না হয়, তবে এই চতুর্থ দিক থেকে আসা এই বিষাক্ত জীবাণু থেকে, নিজেকে, নিজের পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করার উপায় বের করেছেন কি?
আমি বিস্তারিত আরো লিখতে পারতা, কিন্তু কিছু বাধ্যবাধকতা থাকায় সেটি সম্ভব নয়। আমি শুধু ইংগিত দিচ্ছি এমন এক বাস্তবতার,  যাকে আপনি আমি এড়িয়ে যেতে পারব না। হয় সেখানে ডুবতে হবে না হয় গা ঝেড়ে দাড়াতে হবে। মৌনতার কোন সুযোগ নেই। মৌনতা মানেই নিজের পরিবার, আগামী বংশদরদের এক বিকৃতির মধ্যে হাত পা বেধে ছেড়ে দেওয়া।

image

নারীবাদ, সত্য মিথ্যা’র পাঁচপোড়ন!

বর্তমান সময়ে ফেমিনিজম নিয়ে কপচানো বেশ জমে উঠেছে! এতে যত না নারীদের নিয়ে কথা হয় তার চেয়ে বেশি প্রকাশ পায় অজ্ঞতা। এখন পর্যন্ত ‘ফেমিনিজম’ একটি গ্রহনযোগ্য সংজ্ঞা নিরুপন করতে পারেননি আমাদের ফেমিনিজমের কর্মীরা। এদিকে প্রাশ্চাত্যের ফেমিনিজমের সাদা ভালুক  যখন আমাদের  এশিয়ার বিড়ালের সাথে ক্রস ব্রিডিং করতে দেখি, তখন অদ্ভুত কিছু নারী, পুরুষদের দেখি রাস্তায়, স্টেজে যারা প্রকৃতই জানেনা তারা কি নিয়ে কথা বলছে। নিজেদের কর্মক্ষেত্রের আনুকূল্য দিয়ে যারা নিজেদের ফেমিনিষ্ট বা নারীবাদী বলে আখ্যায়িত করেন, তারা যেটা করেন সেটি হচ্ছে, ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার মত। গার্মেন্টস শ্রমিকদের অসহাত্বের সুযোগ নিয়ে, রাজনীতির খোলসে মোড়া এই সব নারীবাদীদের তাত্ত্বিক জবাব দেওয়ার মত অপর দিকে কেউ তেমন একটি নেই। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষিকা এবং ছাত্রী কাজ করছেন কিনা জানি না, তবে যোগ্যতা কিছু যে কিছুটা রাখেন সেটা বলা যায় নির্ধিদায়। তবে এখানে সমস্যা আরেকটি। প্রতিপক্ষকে কোন প্রকার সূযোগ না দিয়ে, তাদেরকে একটি গোষ্ঠীতে সংজ্ঞায়িত করে এড়িয়ে যাওয়া হয়। এটা এক ধরনের চাতুরী।
আশা করি, এই ব্লগের কথাগুলো সামান্য হলেও কিছু অর্থ বহন করবে যারা এখনো শুধু  অজ্ঞ তাত্ত্বিক নারীবাদী হিসেবে নিজেদের না দেখে সংবেদনশীল বাস্তববাদী ও মানবীয় দৃষ্টিতে নিজেদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করবেন।
পুনরায় মনে করিয়ে দেই- প্রাশ্চাত্যের ‘ফেমিনিজম’ এবং আমাদের এশিয়ান বিশেষ করে বাংলাদেশের নারীবাদ বা ‘নারীবাদী’ বিষয় সমার্থক ও সমপর্যায়ের নয়। এটি মেনে নিলে অনেক বাস্তব সত্য আপনা আপনি খোলাসা হয়ে যাবে।
ব্লগটি এই লিংকে গিয়ে পড়ে আসতে পারেন।

Review of the ‘Islam or Feminism: Which one can truly Liberate Women?’ Debate between Feminist Julie Bindel and Zara Faris

আরাফা’ দিনের বৈপ্লবিক গুরুত্ব

“লাব্বয়িক আল্লাহ হুম্মা লাব্বায়ীক
লাব্বায়িকা লা শারিকালাকা লাব্বায়িক
ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা
লাকা ওউয়াল মুলকা লা শারিকা লাক”
                                              
বিদায় হজ্জের ঐতিহাসিক ভাষনের বিষয়াবলি:

১০ই হিজরীর ৯ই জিলহাজ্জ তারিখে বিশ্বনবী সাঃ আরাফাতের বিশাল ময়দানে উপস্থিত লক্ষাধিক সাহাবীর সম্মুখে জীবনের যে অন্তিম ভাষন দান করে ছিলেন তা ইসলামের ইতিহাসে বিদায় হজ্জের ভাষন নামে পরিচিত।

উক্ত ভাষনে রাসূল সাঃ মানবাদিকার সম্পর্কিত কতগুলো বিষয়ে সঠিক দিক নির্দেশনা দান করেন; যার প্রধান বিষয়গুলো হচ্ছেঃ

১। ধর্মীয় আদেশ নিষেধ মনোযোগ সহকারে শ্রবন করা
২। দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
৩। আমানতের খিয়ানত না করা
৪। জুলুম নির্যাতন বন্ধ করন
৫। সুদের লেনদেন নিষিন্ধ করন
৬। নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকরন
৭। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করন।
৮। আভিজাত্যের গর্ব রহিত করন।
৯। দ্বীনের পরিপূর্নতা লাভ।
১০। সাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠায়  গুরুত্বারোপ
১১। রক্তপাত নিষিদ্ধকরন
১২। নবুয়্যতের ধারা সমাপ্ত ঘোষনা
১৩। শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠাকরন।
১৪। শিরক্‌ নিষিদ্ধকরন
১৫। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা
১৬। পিতামাতার সাথে উত্তম আচরন করা
১৭। জ্ঞান অর্জনে গুরুত্বারোপ
১৮। প্রতিবেশীর অধিকার প্রতিষ্টা
১৯। আল্লাহকে সর্বাবস্থায় ভয় করা
২০। চাকর চাকরানির অধিকার প্রতিষ্টাকরন
২১। মানবতার সেবা করন
২২। ঘুষ ও অন্যান্য হারাম পদ্ধতিতে উপার্জন নিষিদ্ধকরন
২৩। উত্তারাধিকারীত্বে অধিকার নিশ্চতকরন
২৪। মদ ও ব্যাভিচার নিষিদ্ধকরন
২৫। ইয়াতীমের মাল ও সম্পদ আত্বসাৎ না করা
২৬। আমীরের আনুগত্ব করা
২৭। মাপে ও ওজন কম না দেয়া
২৮। অঙ্গীকার পালন করা
২৯। পথ ভ্রষ্ট না হবার উপায়
৩০। কৃতজ্ঞতা ও কর্তব্যপরায়নতা
৩১। তাবলীগ তথা দ্বীন প্রতিষ্টার জন্য দাওয়াতি কাজ করা।

তিনি আরো বলেনঃ হে উপস্থিত জন মন্ডলীগন, তোমরা যারা এখানে উপস্থিত আছ তারা আমার এ বানী যারা এখানে উপস্থিত নেই তাদের কাছে পৌছে দিবে।
ভাষন শেষে রাসুল সাঃ বলেনঃ হে সাহাবীগন আমি কি আমার দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি? উপস্থিত সাহাবীগন সমুচ্চস্বরে বললেনঃ হ্যাঁ আপনি তা করেছেন।

এর পর বিশ্বনবী আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ আপনি সাক্ষ্য থাকবেন।

এর পর পবিত্র কোরাআনের সুরা মায়েদার ৩ নং আয়াত অবতীর্ন হয়ঃ
‘আজিকার এই দিনে আমি তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামতকে পূর্ন করলাম। আর জীবন ব্যাবস্থা হিসেবে ইসলাম কে তোমাদের জন্য মনোনীত করলাম।

মহানবী সাল্লাললাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম এর বিদায় হজ্জ্বের ভাষন প্রকৃত পক্ষে মানব ইতিহাসের মুক্তির পুর্নাংগ ‘ইস্তিহার’। ব্যক্তি, সমাজ এমনকি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের যে আলোকিত বার্তা এনেছিলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এর আগে কেউ পুর্নাংগভাবে আনেনি, পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত কেউ আর আনবেও না। কেননা এই আলোকবার্তা মানবীয়, পাশাপাশি ঐশ্বরিক।
তাই, যখন এক সময় সমাজতন্ত্রের  দুর্দান্ত প্রতাপ পৃথিবীর ভিবিন্ন অংশে আলোড়ন তুলেছিল, সে আলোড়ন কিন্তু মুসলিম দেশ সমুহের মধ্যে তুলতে পারে নি। কারন যে ধারনা বা লক্ষ্য নিয়ে সমাজতন্ত্রের আবির্ভাব,  মুসলিম বিশ্ব তার সাথে শত বৎসর আগ থেকেই পরিচিত।  সুতরাং সমাজতন্ত্রের মোহ তাদের টানেনি।
একইভাবে বর্তমান প্রাশ্চাত্য মোহনীতায় সহজে কোন সচেতন মুসলিম বিভ্রান্ত হয় না। কারন আজকের ইউরোপের যত টুকু আলো তার অর্ধেক মেকি বাকি অর্ধেক মুসলিম দর্শন থেকে ধার করা।
ইসলামের প্রাথমিক যুগের মুসলিমরা মহানবী’র বিপ্লবের শিক্ষা,আধ্যাত্মিক ও সামাজিক, এত বেশি আত্বস্থ করেছেন যে,  পৃথিবীর মানচিত্র বদলে দিয়েছেন। মানুষের জীবনের সংজ্ঞা, জীবন দর্শন বদলে গিয়ে সম্পুর্ন নতুন এক জীবন দর্শন পুর্ণতা লাভ করেছে।
আজকের অস্থির পৃথিবীতে সেই দর্শন এখনো এনে দিতে পারে স্থিরতা, বদলে দিতে পারে কুৎসিত  একচোখা মানবিকতার সংজ্ঞা।
মানবতার মুক্তির আলোর মশাল নিয়ে যে নবী হেরার গুহা থেকে শুরু করে ছিলেন,  ঐতিহাসিক আরাফা’র ময়দানে দাড়িয়ে তাঁর সেই মশাল তুলে দিয়ে ছিলেন লক্ষাধিক পবিত্র অনুসারীদের হাতে। এবং সেই থেকে এই মশাল গুলোর হাত বদল হতে হতে আজ আমাদের হাতে। মুসলিম মাত্রই এক একজন আলোর মশালবাহক। কারো মশাল আলো ছড়াচ্ছে বেশি, কারাও অপেক্ষাকৃত কম।
জানি, আজকের বাস্তবতা যদিও ভিন্ন। এটি মশালবাহকের অক্ষমতা, স্বয়ং আলোর মশালের নয়। আজকের তাবৎ দুনিয়ার সকল শিক্ষা, নীতিকথা আর ভালো’ মহানবীর বিদায় হজ্জ্বের ভাষনেরই সম্প্রাসারিত সংস্করণ।