এপ্রিল ফুল অথবা এপ্রিল ফ্রানক

১৪৯২ খৃঃ পহেলা এপ্রিল বিশ্ব মুসলিমের জন্য এক মর্মান্তিক দিবস। ১৪৬৯ খৃঃ এরাগন রাজ ফার্ডিনান্ড এবং ক্যাষ্টাইলের রানী ইসাবেলার পরিনয়ের পর স্পেনে খৃষ্টানগন শক্তিশালী হতে থাকে। মুসলিমদের মধ্যে দেখা দেয় বিশ্বাসঘাতকা, সৃষ্টি হয় আত্বঘাতী ভ্রাতৃযুদ্ধ ও খ্রীষ্টানদের সাথে বন্ধুত্ব। কর্ডভা, সেভিল, ভেলেলিয়া ইত্যাদি পতনের পর সম্মিলিত খ্রীষ্টান শক্তি মুসলিম সভ্যতার জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্রস্থল গ্রানাডা রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। গ্রানাডার শেষ রাজা আবুল হাসানের পুত্র আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ (বুয়াবদিল নামে কুখ্যাত) এক যুদ্ধে বন্দী হয়ে ফার্ডিনান্ডের প্রতারনায় তারই সংগে যোগ দিয়ে পিতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে এবং ফার্ডিনান্ড ইসাবেলা বন্ধুরাজ হিসেবে ৩রা জানুয়ারী ১৪৯২/ ২রা রবিউল আউওয়াল ৮৯৭ হিঃ গ্রানাডা দখল করে ফার্ডিনান্ডের হাতে তুলে দেয়। এ কাজে তাকে সাহায্য করেছিল তার মা আয়েশা। স্ত্রী ও সন্তানের বিশ্বাসঘাতকতায় পরাজিত গ্রানাডারাজ আবু হাসান ভ্রাতা আল জাগাল এর পক্ষে সিংহাসন ও রাজ্য ত্যাগ করেন। গ্রানাডা পতনের পর বিশ্বাসঘাতক বুয়াবদিলের মীরজাফরের ন্যায় পুতুল নবাব হওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। বৃত্তিভোগি হিসাবে সে বিতাড়িত হয়। কিন্তু খ্রীষ্টন্দের বিরুদ্ধে এলাকা ভিত্তিক বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত যুদ্ধ চলতে থাকে। বিজয়ী ফার্ডিনান্ড ঘোষনা করেন যে, দেশের মুসলিমগন অস্ত্র ত্যাগ করে ১লা এপ্রিল (১৪৯২) মসজিদে আশ্রয় নিলে ক্ষমা প্রাপ্ত হবে ও অত্যাচারিত হবে না। মসজিদে মসজিদে আশ্রয় গ্রহনকারী নিরস্ত্র প্রতারিত মুসলিমদের উপর সারাদেশে পরিকল্পিত হামলা শুরু হয়। মসজিদ গুলোতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আক্রমনে প্রায় ৭ লক্ষ মুসলিম নরনারী ও শিশু হত্যা করা হয়। অবশিষ্টরা ধর্মান্তরিত হয়ে আত্বরক্ষা করে। এ হত্যাকান্ড যদিও গ্রানাডার বড় মসজিদে কামান দাগিয়ে, অগ্নিসংযোগে ১লা এপ্রিল ১৪৯২ সালে শুরু হয়েছিল, একই নীতি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে স্পেনের অন্যান্য শহরে ও জনপদে অনুষ্টিত হয়।

মুসলিমদের সাথে এ প্রতারনার স্মৃতি হিসাবে প্রাশ্চাত্যে আনন্দ দিবস হিসেবে ‘এপ্রিল ফুল’ পালিত হয়। ইদানীংকালে এটি এপ্রিল ফ্রানক হিসেবেও ব্যপকভাবে পালিত হচ্ছে.