বৃক্ষ জীবন; মানবের বৃক্ষ

বলছি না যে সকালটা অন্য আর সকালগুলোর মতই ছিল। উয়িন্ডি, রেইনি এন্ড কোল্ড। স্বভাবত এভাবেই বর্ণনাটা যুতসই। গাড়ি পার্ক করে কর্মস্থানে প্রবেশ করার আগে কিছুটা হাটা পথ। অন্য দিনগুলোর মতই হাঁটছিলাম। মাথায় তুলে নেওয়া হুডি বাতাসের ঝাপটায় মাথা থেকে সরে যাচ্ছিল। অনেক খানি সামনের দিকে টেনে নিতে গিয়েই চোখে পড়ল এই দৃশ্য। থমকে দাঁড়ালাম। কি একটা তীক্ষ্ণ উপলব্ধি বিদ্যুৎ গতিতে মাথায় খেলে গেল। তার পর সেই উপলব্ধির একের পর এক ব্যবচ্ছেদ। নিজের মনে প্রশ্ন, নিজের মনেই উত্তর আসে। কিন্তু যে উপলব্ধির তীক্ষ্ণতা বোধ আর উপলব্ধির মাত্রাকে পাশ খাটিয়ে অন্য এক মাত্রায় দুলতে থাকে, তাকে কি এই কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার সময় বাধ্যবাধকতার মইয়ে ছোঁওয়া যায়? তাই ভিডিও করে নিলাম। তার পর অনেকদিন গেছে। বেশ কয়েকবার দেখেছি। যেই সময়ে আমি ভিডিওটি রেকর্ড করি, সেই সময়ের অনুভূতি ফিরে আসছিল না।

কিছুক্ষণের মধ্যেই নতুন ইংরেজি বর্ষ ২০১৭। অর্থাৎ ২০১৬ এর বিদায়। মানে ঝড়ে যাওয়া আরেকটি বছর।

এই বাতাসের সাথে উড়ে যাওয়া পাতা, এই যে ক্ষণ, অনেক ভাবেই আমি একে উচ্চারণ করেছি। ঝড়ে যাওয়া, খসে পরা, ছিটকে পরা, মরে যাওয়া, পরে যাওয়া। কি থেকে বা কার থেকে অথবা কোথায় থেকে প্রশ্নের উত্তর অবশ্য একটাই, বৃক্ষ থেকে। যদিও বৃক্ষ কে ছোট, বড় কিংবা বট গাছ ইত্যাকার বিশেষণ জুড়ে দেওয়া যায় কিন্তু উৎসমুখ তো একটাই, বৃক্ষ।

 

শুনেই তো আসছি, মানব জীবন আর বৃক্ষ জীবন বেশ কিংবা অনেকটাই সাদৃশ্যপূর্ণ।

 

এই  গাছের পাতার মতই মানব জীবন ঝরে যায়। সময় হলে। ছোটকালে বাবার কাছে একটি গল্প না ঠিক, মিথ, প্রায় শুনতাম। যখন স্বচ্ছ চাঁদ আকাশে দেখা দিত। বাবা চাঁদের দেশের বিরাট গাছ কে দেখিয়ে বলতেন যখন ঐ চাঁদের গাছে নতুন পাতা জন্ম নেয় তখন সেই পাতায় যার নাম লেখা থাকে দুনিয়াতে তার জন্ম হয়। আর যখন ঐ চাঁদের গাছের একটি পাতা ঝরে পরে তখন দুনিয়াতে সেই পাতায় লেখা যার নাম তার মৃত্যু হয়।

 

এই গাছের পাতার মতই আমরা ঝরে পড়ছি, খসে পড়ছি, ছিটকে পরছি, পতিত হচ্ছি। উড়ে যাচ্ছি। কিন্তু কার থেকে, কি থেকে সেটা বেশ একটু জটিলই। বৃক্ষ জীবন আর মানব জীবন সম ভেবে সহজেই বলতে পারতাম, পাতা যেমন গাছ থেকে আমরা তেমনি জীবন থেকে। কিন্তু সেই বলা কি সঠিক হত?

 

আমাদের তো জীবনকালে ছিটকে, খসে, পতিত হওয়ার আগেই অনেকবার ছিটকে,খসে, পতনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পরিবার থেকে, সমাজ থেকে, ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে। স্বপ্নের কাছ থেকে, কাঙ্ক্ষিত বাসনা, কামনা আর আপন বলয় থেকে। পাতার মত উরে উরে কোথায় যে যাই, কারো উঠোনে, দরজার সামনে কিংবা চালে। পিচ ঢালা রাস্তায় নয়ত গ্রামের কোন মেঠো পথে। নিজের বৃক্ষ জীবনের কাছে কি যাই কখনো ফিরে? না।

তাই, আমার কাছে, জীবন থেকে খসে পরা, ছিটকে পরা শুরু জীবন শুরুর সাথে সাথেই। মায়ের কোল থেকেই যার শুরু।

কিন্তু বার বার একই প্রশ্ন, তাহলে আমার বৃক্ষ কে?

 

 

 

 

 

মানুষ, শত্রু মানুষ

একদিন মানুষের শ্ত্রু ছিলো বন্য জীবজন্তু ও সাপ। আজ মানুষের শত্রু মানুষ। মানুষের বড় প্রতিযোগিতা কে সবচেয়ে শক্তিশালী ও মারণাস্ত্র তৈরী করতে পারে। এইমাত্র যে শিশুটি জন্মগ্রহন করলো তার জন্য একফোঁটা দুধ বরাদ্ধ নেই অথচ তাকে হত্যা করার জন্য বরাদ্দ রয়েছে লক্ষ্য কোটি ডলার পাউন্ডের অস্ত্র।

অন্ধকারে অন্য আলো

বৈশাখ আসতে আরো কিছুদিন বাকী, কিন্তু আকাশের গর্জন আর বিদ্যুত চমকানো দেখে মনে হল, বৈশাখ এসেই গেল! কাল বৈশাখী ঝড়ও কম যায় না, জানালার কপাঠ আর টিনের চালে শীলা বৃষ্টির গান, ভয় আর ভালোলাগার সংমিশ্রনে রাত জেগে থাকার বাহানা !   

এথিষ্ট বনাম রিলিজিয়ন এবং কিছু বাস্তবতা

CNN’র Atheist: Inside the World of Believers’ ডুকুমেন্টারী নিয়ে টুইটার ফিডে প্রখ্যাত বায়োলজিষ্ট এবং এথিষ্ট রিচার্ড ডওকিন্সের মন্তব্য পরে অবাক হলাম।
সারা বিশ্বে এথিষ্টদের অন্যতম পুরোধা এই বিখ্যাত মানুষটিও এমন একটি খোঁড়া যুক্তি কিংবা কথা বলতে পারেন ভেবে বিশ্বাস করতে কষ্ট হল। শেষে ডওকিন্সের টুইটার ফিডে গিয়ে দেখি তিনিও ঐ বক্তব্যের ফ্লাশকার্ডটি রিটুইট করেছেন। তখন আর কোন সন্দেহ থাকল না, তারই বক্তব্য এটি।
তার সেই বক্তব্যটি কি ছিল?
তার কথাটি কোর্ট করে লিখছি -” The world would be a better place without religion’
কথাটি শ্রুতি মধুর। তাঁর সাথে সহমত পোষন করতাম যদি জানতে পারতাম- তিনি ‘Better Place’ বলতে কি বুজিয়েছেন? তাঁর সেই ‘Better Place’ কি ধরনের স্টান্ডার্ড রাখে। এমন না যে তিনি ধর্ম শাস্ত্রের ‘হেভেন’ থেকে তিনি বেটার প্লেইসের ধারণা পেয়েছেন।
তাহলে তাঁর এই ‘Better Place’র মাজেজা কি? এটা কি কেবল তাত্ত্বিক নাকি এর বাস্তবতা আছে? জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের চথোর্পাশ্বিক চাপে এবং কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে যদি এরকম একটা অদ্ভুত দাবী করে বসেন তাহলে বলার কিছুই থাকে না। কিন্তু তাঁর মতো ব্যক্তির এমন কাঁচা ভাবে বিভ্রান্ত হওয়া কি মানায়?
তাঁর অপর একটি কথাও কিন্তু তাঁর এই কথার সাথে খাপ খায় না। ঐ টুইট ফ্লাসেই কোর্ট করে বলছেন ‘Evidence is the only reasons to believe something’
এখন আমরা যদি তাঁর এই কথাকে সামনে রেখে পুর্বের ‘Better Place’ খুঁজতে যাই, তাহলে পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা কোন ‘Better Place’র evidence পাইনা। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে আজ পর্যন্ত, আমরা জানি, কোন কালই বেটার ছিল না। এর জন্য আমি ইতিহাস তুলে আনব না, আমার এ কথার পক্ষে ডারউইনের এভিলুশনের একটি তত্ত্বই যথেষ্ট! ডারউইনের তত্ত্বে বলা হচ্ছে ‘Survival of the Fittest’. যে ওয়ার্ল্ড এ মানুষ সহ সকল প্রানীকে অস্তিত্ব রক্ষার্থে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়, সেখানে কি ‘Better Place’র আশা করা যায়?
সুতরাং এ সকল অবাস্তব কথায় বাহবা পেলেও ‘Better world’ তৈরিতে সামান্যতম অবদান রাখে না।
এখানে অবশ্য একটি ফাঁক থেকেই যায়। স্রষ্টার অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় এবং রিলিজিয়ন এর বিরোধিতা সমার্থক নয়। স্রষ্টায় বিশ্বাসী একজন ব্যাক্তিও রিলিজিয়নের বিরোধিতা করতে পারেন। ধর্মীয় রীতিনীতি’র প্রতি অবজ্ঞা দেখাতে পারেন।
কিন্তু ডকিন্স’দের মত বড় মাপের বিজ্ঞানী এবং থিংকার  যখন রিলিজিয়নের বিরোধিতা করে এথিষ্ট হওয়ার দাবী করেন, তখন সেটা ঠিক মেনে নেওয়া যায় না।

আবার ডকিন্স’রা ওয়ার্ল্ডকে বেটার প্লেইস হিসেবে যখন রিলিজিয়নকে দায়ী করেন বা পরষ্পরকে শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে চান, আসলেই কি তারা ওয়ার্ল্ডকে বেটার প্লেইস হিসেবে দেখতে চান? সন্দেহটি এ কারনেই জাগে যে, তাদের কথা যদি মেনেও নেই, রিলিজিয়ন এই পৃথিবীকে বেটার প্লেইস হতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, তারপরও কথা  থেকে যায়। বর্তমান সময়ের কথাই যদি ধরি, আজকে যে এত অস্রের যোগান, অস্রের রমরমা ব্যবসা, এসব কোম্পানীগুলোর মালিক নিশ্চই ভ্যাটিকান পোপ ফ্রান্সিস নন। প্রধান প্রধান ব্যংকগুলোর মিলিয়ন পাউন্ড বেতন ও বোনাস পাওয়া কর্তাব্যক্তিরা নিশ্চয়ই চার্চের প্রিষ্ট বা ফাদার নয়। হুকার, প্রিস্টিটিউট হিসেবে প্রচন্ড টাণ্ডায় কোন নানকেও দেখি না দাঁড়িয়ে থাকতে। অথচ খবরে প্রকাশ সেই সকল সাধারণ মেয়েরাই আজকাল হুকার হিসেবে পার্ট টাইম জব বেছে নিচ্ছে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে বলে। ডকিন্সদের তো এসব নিয়ে কথা বলতে শুনি না।
ফ্যাশন বলি আর অবসেসন বলি, রিলিজিয়নের বিরোধিতার মাধ্যমে নিজেদের এথিষ্ট হিসেবে জানান দেওয়া অতি নিম্নমানের একটি প্রচেষ্টা। এতে  জ্ঞান বা প্রজ্ঞা, এমন কি বেটার Consciousness’র পরিচয় পাওয়া যায় না।
রিচার্ড ডিকিন্সদের জ্ঞান এবং প্রজ্ঞার এই ভঙ্গুরতা দেখে সত্যি অবাক লাগে!

রেড নোজ ডে

বৃটেনে বসবারত প্রায় সবাই জানেন, রেড নোজ ডে কি। যদি জানা না থাকে তবে উইকিপিডিয়া থেকে জেনে নিতে পারেন।
সংক্ষেপে যেটা বলা যায়, সেটি হচ্ছে, জাতীয়ভাবে দান বা ডোনেশন কালেকশনের দিন।
তবে রেড নোজের বিশেষত্ব হচ্ছে এই দানের সাথে ফান থাকে বেশি। দু দিন আগে  অর্থাৎ  ১৩ই মার্চ ছিল রেড নোজ ডে, জাতীয়ভাবে এই রেড নোজ ডে পালন বেশ দেখার মত বিষয়। সেলেব্রেটি সহ জাতীয়ভাবে পরিচিত এমন কোন মুখ নেই যারা এই রেড নোজ বা কমিক রিলিফ ডে’কে সামনে নিয়ে কিছু না কিছু অবদান রাখেন না। এবারের  কমিক রিলিফ নিয়ে স্টিফেন হকিং ও ডেভিডের অংশটি বেশ ভালো লেগেছে।
তবে যে যাই করুক, রেড নোজ ডে নিয়ে বাচ্চাদের মধ্যকার নিষ্কলুষ ফান অতুলনীয়। প্রতিটি স্কুলের বাচ্চারা যেভবে রেড নোজ ডে কে  উদযাপন করে সেটি অসাধারন। কেক সেইল, ফেইস পেন্টিং সহ নিজেরা কত কিছু করে এবং আয়োজন করে মানি কালেকশনে অবদান রাখে সেটি দেখে এবং জেনে শ্রদ্ধা আসে তাদের প্রতি।
2
কিন্তু এই নিষ্পাপ শিশুদের আনন্দ দেখে মায়াও হয়। ভেবে অবাক হই, এখানকার বাচ্চাদের কিভাবে নিষ্কলুষ আনন্দ দেওয়ার নাম করে পেঠুক শ্বেত হস্তিরা কেমন  মাথা ধুলাই করে যাচ্ছে। রেড নোজ ডে’র সকল ডোনেশন ব্যায় করা হয় অনুন্নত দেশ গুলোর সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের কল্যানে। গত শক্রুবার রাতে বিবিসি আয়োজন করে ছিল ঘন্টা ব্যাপী ডোনেশন কালেশনের অনুষ্টান, সেখানে বিভিন্ন সেগম্যান্টে দেখাল কমিক্স রিলিফ ডে’র অনুদান কিভাবে মানুষের সাহায্যে অবদান রাখছে। যে কারো সেই সেগমেন্ট গুলো দেখলে চোখে পানি চলে আসার কথা। আমারও এসেছিল, কিন্তু আমার কুঠিল মন প্রশ্ন করে যাচ্ছিল অন্য কিছু।
আমার মনে প্রশ্ন জাগে আসলেই কি এই সব হর্তা কর্তা মানুষ গুলো চায় আফ্রিকার মানুষদের জীবন মান পরিবর্তন হোক? যদি চায় তবে কেন হচ্ছে না আজ যুগের পর যুগ? প্রতি রেড নোজ ডে’তে যে মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ড অর্থ সংগ্রহ করা হয়, সেই অর্থ কি যথেষ্ট নয় আফ্রিকান দেশ গুলোর ভাগ্য উন্নয়নে? অথচ সত্য হচ্ছে এই কমিক ডে’তে সংগ্রহিত অর্থের একটা বিরাট অংশ ব্যায় হয়ে তামাকজাত পন্য, এলকোহল ও অস্ত্র তৈরী কোম্পানি গুলোর শেয়ারে ইনভেষ্ট করে। এখানকার শিশুরা কি সেটা জানে বা তাদের জানতে দেওয়া হয়? তারা তো শুধু জানে তারা নিজেরা যে সমস্থ অর্থ দান করছে তা ব্যয় হচ্ছে হাজার মাইল দুরের সুবিধা বঞ্চিত তাদেরই মত শিশুদের খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবায়।
জানি না এখানকার শিশুদের মনে এই প্রশ্ন জানে কিনা, আজকের আফ্রিকান দেশ গুলোর বর্তমান করুণ অবস্থা কার সৃষ্টি? ইথিওপিয়া সহ অন্যান্য আফ্রিকান দেশ গুলো গৃহ যুদ্ধের কারনে যারা বিপর্যস্ত, তারা কাদের তৈরি অস্র দিয়ে যুদ্ধ করে ছিল এবং করে যাচ্ছে?  আজকের তথাকথিত সভ্য দেশ গুলো কি ইচ্ছে করলেই পারত না এই দেশ গুলোর মধ্যকার গৃহ যুদ্ধ থামাতে? পারত না অস্রের বানিজ্যকে অগ্রাধিকার না দিয়ে মানবতাকে মুল্যায়ন দিতে?
তাই আমি তাদের এই ভন্ডামীকে ভন্ডামী হিসেবেই দেখি, তাতে যতই রং মাখানো হোক না কেন। আমিও এও বিশ্বাস করি অর্থ ও অস্রে উন্নত দেশগুলো ইচ্ছে করেই আফ্রিকান দেশগুলোতে এই বিপর্যয় তৈরী করে রেখেছে তাদের নিজেদের স্বার্থে। আফ্রিকান কোন দেশ যদি নিজেদের চেষ্টায় কিছুটা উন্নতি করার ক্ষমতা অর্জনও করে তারা সেই ক্ষমতা কে চলে কৌশলে নষ্ট করে দিবে। পৃথিবীতে যদি আফ্রিকান দেশগুলো না থাকে তবে তারা তাদের এই ‘ডু সামথিং ফানি ফর মানি’র ভন্ডামি পৃথিবীর মানুষকে দেখাবে কি করে? আর তখন কি সেটা ভালো জমবে?

আমি কি উন্নত সভ্যতার একজন গর্বিত নাগরিক?

যে প্রশ্নটি ইদানিং আমার মাথায় তিড়িংবিড়িং করে লাফাচ্ছে সেই প্রশ্নটি হচ্ছে; :আমি কি সত্যিই মানব সভ্যতার শ্রেষ্ট সময়ে বাস করছি?’

আমাদের চারপাশের যা ঘটছে, আমাদের চোখের আড়ালে, দুরে, আমাদের নিত্য দিনের ব্রেকিং নিউজ পুনরায় ভাবতে বাধ্য করে- আমরা কি আসলেই সভ্যতার উৎকর্ষে উপনীত হয়েছি? 

আদিম সমাজ বলে আমাদের আজকের তথাকথিত সভ্য সমাজ নাক সিটকালেও আদিমতাই বর্তমান সমাজের আষ্টে পৃষ্টে জড়িয়ে আছে। হয়ত মোড়াক কিছুটা জমকালো, বাহ্যিক প্রকাশ পৃথক কিন্তু মৌলিক যে বৈশিষ্ট্য, তাতে আমি সামন্যই পার্থক্য দেখতে পাই।

আদিম সমাজের মানব সভ্যতার কথা যদি বাদই দেই, এই যে আমরা কথায় কথায় মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঢেকুর তুলি, আসলে আমরা কতটা তৃপ্তি নিয়ে সেটা দেই, নাকি আমাদের বর্তমানকালীন অন্ধকার আর অসভ্যতাকে আড়াল করতে অতীতকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করি?

যদি তুলনা করি, কি কি বৈশিষ্টের মানদন্ডে আমরা অপেক্ষাকৃত সভ্য , তবে বেশ খানিকট ভাবনার বিষয় আছে।

আদিম যুগের মানুষ কাঁচা মাংস খেত, উলংগ হয়ে বসবাস করত, শিক্ষাদীক্ষার নাম গন্ধও ছিলনা, রোগে শোকে ভুগে জীবন অতিবাহিত করত।

হ্যাঁ, এসব কথা যেমন সত্য, তেমনি সেই একই বৈশিষ্ট্য কি বর্তমান মানব সভ্যতায় উপস্থিত নেই? আমাদের নিজেদের কর্মকান্ড জীবনাচার আমাদের কাছে এখন শোভনীয় মনে হচ্ছে বলেই যে আমরা উত্তম এমন আত্বপ্রবঞ্চক ধারনা সত্যিই দু:খজনক।

আজকের যান্ত্রিক সভ্যতা কিংবা আরো সহজ কথায়, প্রযুক্তির যুগে আমদের কে একটি শ্রেষ্ট শ্রেষ্ট ভাব এনে দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু এর অন্ধকার দিকটাও বিবেচনায় আনা প্রয়োজন।

যুদ্ধ বিগ্রহ যে কোন যুগ বা সভ্যতার অন্ধকার দিক, আজকে আমরা যুদ্ধ নয় শান্তি চাই বলে যতই চিৎকার চেচামেচি করি না কেন, এই সভ্য জগৎও কিন্তু যুদ্ধের আদিম কিংব মধ্যযুগীয় ঐতিহ্য থেকে নিজেকে আড়াল রাখতে পারছে না, যুদ্ধে কে নায়ক আর কে খল নায়ক সেটি বিবেচনায় না আনলেও শুধু এটুকু চিন্তায় আনলেই যথেষ্ট যে, এই যে কোটি কোটি টাকার অস্র নির্মান, পারমানবিক অস্রের মজুদ সেটি কি এমনি এমনিই প্রদর্শনীর জন্য? একবার কি চিন্তায় আসে না, আমার আপনার পোশাক নিত্য নতুন জিজাইনের মতই নিত্য নতুন মারনাস্ত্রের প্রটোটাইপ তৈরি হচ্ছে এবং অস্রের বাজারে দাম হাকানো হচ্ছে।

কোন ভিন দেশী শত্রুর জন্য নয়, এগুলো এই পৃথিবীর মানব মানবীর হত্যার জন্যই তৈরী করা হয়েছে এবং হচ্ছে, তারপরো যদি আমরা দাবী করি আমরা সভ্যতার উৎকর্ষে, তবে উপহাস করেই বলতে হয়, গ্রো আপ ম্যান! 

মানব সভ্যতাকে যদি পৃথিবীর একটি ক্ষুদ্র অংশের চাকচিক্য দিয়ে মান নির্ণয় করা হয় তবে সেটিও হবে মুর্খতা। 

যাই হোক এসব বিষয় নিয়ে অনেক গবেষকই ভিবিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে বিচার করে সভ্যতার উচ্চ কিংবা নিম্ন মান নির্ধারণ করার প্রয়াস পাচ্ছেন, গবেষণাও প্রচুর হচ্ছে, এই ক্ষুদ্র লেখায় সেগুলো নিয়ে লেখাকে দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছি না।

আমি একটি ব্যাপারে বেশ সচেতন, মানব জীবনের অপ্রত্যাশিয় মৃত্যুর হার নিয়ে।
আমাদের বর্তমান চোখে যে যুগ গুলো ব্যকডেটেড, কালো, সেই সব যুগের অন্যতম বৈশিষ্ট হচ্ছে, মানব জীবনের মুল্যহীনতা বা অনর্থক অপচয়, সেটি রোগে হোক কিংবা যুদ্ধে। কিন্তু আমরা কি অস্বীকার করতে পারি আজকের এই সভ্য জগৎ এর থেকে ব্যতিক্রম নয়? খাদ্য – বস্ত্রের অভাবে মৃত্যু কি অনুপস্থিত আজকের সভ্য পৃথিবীতে? মানব জীবন আজও কি মুল্যহীন নয় বর্তমান সভ্য জগতে? 
বলা হয়ে থাকে রোগের মহামারীতে হাজার হাজার মানবের মৃত ছিল স্বাভাবিক, আজও কি সেটি সেই স্বাভাবিকতার উদাহরন নেই বর্তমান সভ্য জগতে? যে সভ্য জগতের বাসিন্দাদের অনেকেই জানে না ইবুলা কি কিংবা ইবুলা কি জিজ্ঞেস করলে বলে সেটি একটি পপ ব্যন্ড!
মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় বর্বরতায় হাজার হাজার মানবের মৃত্যুকে আজ অবিশ্বাস্য মনে হয়, কিন্ত সেদিন সেই সব মৃত্যুর জন্য প্রয়োজন ছিল যুদ্ধের, একটি প্রয়োজন সাপেক্ষ সময় সম্মুখ যুদ্ধ শেষে বিজয়ীরা হত্যা করত বিজিতদের, আজকের  সভ্যতায় শত শত মৃত্যুর জন্য সম্মুখ যুদ্ধের প্রয়োজনও পড়ে না, অপেক্ষাকৃত অনেক কম সময়ে হাজার হাজার – শত শত মানব মৃত্যু সম্ভব এবং সেটির প্রমান আমরা পেয়েছি জাপানের হির‍্যোসিমা আর নাগাসাকিতে এবং সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে যে কোন সময়। একদিকে মানবতা মানবতা বলে কিছু খেকশেঁয়াল হুক্কা হূয়া দিয়েই যাচ্ছে অন্যদিকে তারই জ্ঞাতি ভাই নির্মাণ আর আবিষ্কার করে যাচ্চে নিত্য নতুন ধ্বংসাত্মক অস্র? আমি কি বিশ্বাস করব এসব অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে ভিন গ্রহের কারো সাথে বা এগুলো ব্যবহার করা হবে এলিয়েনদের সাথে যুদ্ধ করতে?
ভাবতে অবাক লাগে, নিজেদের চারপাশে পারমানবিক বোমার মজুদ রেখে আমরা পৃথিবী ও এর মধ্যে বসবাসকারী প্রানীদের জীবন বিপন্ন বলে বলে আক্ষেপ করি। বর্তমানে ভিবিন্ন দেশে যত সংখ্যক এই পারমানবিক বোম আছে এর সিকি ভাগও যদি ব্যবহার করা হয় তাহলে পৃথিবীতে মানুষ কেন কোন প্রানীরই অস্তিত্ব থাকবে না, আর সেই আমরাই, উন্নত মানব সভ্যাতার অধিকারী যারা কিনা মানুষের বসবাস উপযোগী পৃথিবী নিশ্চিত করতে পুর্বের যে কোন সভ্যতার মানুষের চেয়ে বেশি অগ্রগামী, কি হাস্যকর! রোগ শোকে মানুষের মৃত্যু আজ যতটানা প্রাকৃতিক, তার চেয়ে বেশি মানবীয়, বেঁচে থাকা কিংবা না থাকাটা নির্ধারন করছে অল্প কিছু এলিট, তাদের ল্যবরটরিতে নির্ভর করছে পৃথিবীতে কারা বেঁচে থাকবে আর কারা থাকবে না, এটিই বাস্তব সত্য, এটিই সভ্য জগতের আসল পরিচয়।
আজকের সভ্য জগতে শত শত মৃত্যুর আরেকটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে বিমান দুর্ঘটনা, এটি আরো ভয়াবহ। পলকেই কিংবা মিনেটের ব্যবধানে শত শত মানব জীবন ইতি টানে আমরা এই 2014 সালেই এর প্রমান পেয়েছি, ইউক্রেনের উপর দিয়ে যাওয়া MH370 এর বিমান যাত্রীদের মৃত্যু, মালেশিয়ান এয়াল্লাইসেন্সের MH17, 242 জন যাত্রীর নিখোঁজ, এবং এই কিছুদিন আগে এয়ার এশিয়ার 139 জন যাত্রীর মৃত্যু।
মৃত্যু তো মৃত্যুই, সে যুদ্ধেই হোক আর বিমান দুর্ঘটনাজনিতই হোক, মাধ্যম ভিন্ন হতে পারে কিন্তু ফলাফল তো সে একই, নিরপরাধ মানব জীবনের অপ্রত্যাশিত মৃত্যু।
আদিমযুগ কিংবা মধ্যযুগ, মানব জীবনের অপ্রত্যাশিত মৃত্যর মাধ্যম ছিল সীমাবদ্ধ, কিন্তু আজকের সভ্য জগতে অপ্রতাশিত মৃত্যুর মাধ্যম অনেক অনেক বেশি, সুতরাং আমাকে যদি বিশ্বাস করতে বলা হয়, আমি মানব সভ্যতার সবচেয়ে উন্নত যুগে বাস করছি, তবে আমাকে সেটি মেনে নিতে হবে যে, আজকের সভ্য জগত বৈচিত্র্য আর চাকচিক্যে হয়ত পুর্ববর্তী যুগের তুলনায় অনেক আপডেটেড কিন্ত মৌলিকতায় সমান, বরং বলা যায় অনেক নিম্নে।

তাই, আমি নিজেকে মানব ইতিহাসের সর্বোচ্চ সভ্য জগতের নাগরিক হিসেবে মানতে রাজি নই, নিজের যেটুকু পরিশীলিত জ্ঞান, বিবেক ও বুদ্ধি এখনো ধারণ করি, সেই বোধ থেকেই বলতে পারি, আমি এই তথাকথিত সভ্য জগতের বাসিন্দা হিসেবে গর্ববোধ করি না।

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব

American Snipper ও কয়েকটি সত্য

হলিহুড ছবি American Snipper নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। এটি অধিকাংশ ওয়েষ্টার্ন মিডিয়াতেই। যার কারনেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছবিটির প্রশংসা করা হয়েছে অন্ধভাবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি দিয়ে অনেক মিডিয়া বিশেষ করে আমেরিকানদের মধ্য সস্তা পেট্রিজমকে এম্পেসাইজ করার হাস্যকর প্রচেষ্টা দেখা যায়। তবে তারা পেট্রিজমকে সামনে আনতে না পারলেও কিছু এক্সিটিমিষ্টকে সামনে তুলে ধরতে পেরেছে।
যাই হোক, ছবিটি দেখে যে কয়েকটি কথা আমার মনে এসেছে সেটাই বলতে চাচ্ছি এখানে।
প্রথমত, যে ইরাক যুদ্ধ সম্পুর্নটাই মিথ্যার উপর এবং অবৈধ। তার মধ্যে যতই বাহাদুরি দেখানো হোক না কেনে, তাতে যে বিশেষত্বই দেখানো হয় না কেনো, আদতে তা ঘৃণাই আনবে যারা জানে আসলে ইরাক যুদ্ধ কি ছিল। আর এটা এমন কি বিশেষত্ব যে, যুগের সর্বাধুনিক যুদ্ধাস্র নিয়ে কিছু পুরাতন অস্রের সাথে যুদ্ধ করতে। এটাও মনে রাখা দরকার, ইরাকে আমেরিকানরা পর্যুদস্ত হয়েছে। কিন্তু সেটা তারা কখনই স্বীকার করবে না। তাই তার দেশের পাবলিকের ইমোশনকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করতে চায় এবং আমেরিকান স্নিপার হচ্ছে তাদের একটি। এছাড়া অনেক গোপনীয়তা আছে ইরাক যুদ্ধে যে গুলো আমেরিকান জনগনের সামনে তারা আনতে চায় না। তাই, ম্যাংগু পিপল কে কলা খাওয়াতে সেই পুরাতন মদ, দেশ প্রেম কেই তারা নতুন লেবেল দিয়ে পরিবেশন করছে আমেরিকানদের ডাইনিং টেবিলে।
ছবিটির প্রথম দৃশ্যেই দেখি ছবির স্নিপার Chris Kyle’s একটি শিশুকে গুলি করে হত্যা করছে। এই শিশুর হত্যার অপরাধকে ঢাকতে দেখানো হয়েছে শিশুটির হাতে ছিল বম।
এই দৃশ্যের মধ্যে একটি সত্য অবশ্য ছবির ডাইরেক্টর পরোক্ষভাবে স্বীকার করেছেন যে, ইরাক যুদ্ধে অনেক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।  কেননা,  যদি ধরেও নেই শিশু ছেলেটির হাতে বম ছিল, সে ইচ্ছা করলেই সেটি তার অন্যান্য সহযোগীদের বলে সতর্ক করে দিত, শিশুটিকে গুলি করে হত্যা না করেও তাকে থামানো যেত। আবার এও যদি ধরে নেই শিশুটি খুব কাছে চলে এসেছিল যার ফলে সহযোগীদের সতর্ক করার সময় তেমন ছিল না। এ ক্ষেত্রে স্নিপার Chris Kyle’s কি শিশুটিকে সতর্ক মুলক গুলি করতে পারত না। এমনই যদি গুলি করতেই হল, তবে সেটি কেন হাত বা পায়ে নয়, হত্যা করার উদ্দেশ্যে ঠিক বুকের মধ্যে! অর্থ্যাৎ আমেরিকান সৈন্যরা এটি মনিস্তাত্ত্বিক দিক থেকে আগ থেকেই তৈরী ছিল- শত্রু হিসেবে সামনে সে যেই হোক, নারী কিংবা শিশু, ছোখ বন্ধ করে তাকে হত্যা করতে হবে। অপর আরেকটি দৃশ্যে অবশ্য দেখা যায়, (চারবারে ট্যুরের দ্বিতীয় ট্যুরে- যখন ইতিমধ্যে Chris Kyle’s দুটি সন্তানের পিতা) সে রকেট লাঞ্চার কাধে নেওয়া একটি শিশুকে গুলি করতে গিয়েও করেনি কারন শিশুটি শেষ পর্যন্ত রকেট লাঞ্চারটি কাধ থেকে ফেলে দেয় এবং স্থান ত্যাগ করে। এই দৃশ্যে সত্য থাকলেও কিন্তু যে সকল নিরপরাধ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে, তার দায় মিটে যায় না। আরেকটি বিষয়, যে মুহুর্তে সেই ছোট্ট শিশুটি রকেট লাঞ্চারটি কাধে তুলে নেওয়ার আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে, স্নিপার Chris Kyle’s এর একবার কি মনে হয়ে ছিল কেন সেই শিশুটি তার চেয়ে ভারী অস্ত্রটি কাধে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছে? ঘৃণার পরিমান কতটুকু হলে পরে একটি শিশু এরকম একটি কাজ করার ইচ্ছা জাগে। Chris Kyle’s লেখা বায়োগ্রাফিতে এরকম কোন প্রশ্ন এসেছে কিনা জানি না এবং এনে থাকলে এর উত্তরে সে নিজেকে কি দিয়ে নিজেকে প্রবোধ দিয়েছে?
শেষ যেটি বলব, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন, স্নিপার Chris Kyle’s তার দ্বিতীয় ট্যুরে যাওয়ার সময় মানসিকভাবে সুস্থ ছিল না। এটি একটি চরম সত্য। বৃটিশ কিংবা আমেরিকারন যে সকল সৈন্যই ইরাক/আফগান যুদ্ধ থেকে ফিরে এসেছে,  তাদের মধ্যে মানসিক বৈকল্য দেখা দিয়েছে। কারন তারা যুদ্ধের ফিল্ডে যতই ধ্বংস বা মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছে তার চেয়ে বেশি ছিল মনিস্তাত্ত্বিক দিক থেকে, যুদ্ধের নৈতিকহীনতা। কারন একদিকে পুরাতন অস্ত্রধারী স্থানীয় অধিবাসী আর অপর দিকে তারা সর্বাধুনিক যুদ্ধাস্রে সজ্জিত ভিন দেশি। এই সত্য যারাই উপলব্ধি করেছে তাদের সবার মধ্যে এক ধরনের হীনমন্নতায় ভুগিয়েছে। ফলে তার প্রভাব পরেছে পারিবারিক,  ব্যক্তি জীবনে।
এখন কথা হচ্ছে, Chris Kyle’s মত সাইকোপাথ স্নিপারদের কাছে আমরা কি ধরনের আচরন আশা করতে পারি? যে স্নিপারটি স্বাভাবিক অবস্থায় একটি শিশুকে হত্যা করতে হাত কাঁপে নি, সে তার সাইকোপাথিক পেট্রিজম থেকে কি ধরনের হিংস্রতা দেখাবে সেটা সহজেই অনুমেয়।
এই ছবিটির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে, স্নিপার Chris Kyle’s আর  ইরাকী স্নিপার যে অলিম্পিকে গল্ড মেডেলধারী, মধ্যকার এক অসম প্রতিযোগিতা।  শেষ পর্যন্ত Chris Kyle’s ইরাকী সেই স্নিপারকে হত্যা করতে পেরেছিল, কিন্তু তাতেও Chris Kyle’s এর বিশেষত্ব বা হিরুগিরির কিছুই নেই। Chris Kyle’s এর শেষ ট্যুরে আমরা দেখি তাকে আরো বেশি আধুনিক যুদ্ধাস্রে সজ্জিত এবং লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট করার সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। সুতরাং এটিতে ব্যক্তি স্নিপার Chris Kyle’s এর কৃতিত্ব যতট না তার চেয়ে বেশি আধুনিক প্রযুক্তির।
সুতরাং দুরের লক্ষ্য বস্তুতে নির্ভুল গুলি ছোড়ার একজন  হিসেবে অবশ্যই Chris Kyle’s কৃতিত্ব রাখে কিন্তু ইরাক যুদ্ধে স্নিপার হিসেবে তার স্বকীয় যৌগ্যতা যতটা না, তার চেয়ে বেশি প্রযুক্তিগত। সেটিই তাকে ৩০০র মত নিজ দেশ দখলকারীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া ইরাকীদের হত্যা করতে সাহায্য করেছে।
আরেকটি সত্য আছে এই ছবিটিতে। Chris Kyle’s এর ছোট এক ভাইও ইরাক যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিল।  সেই ভাইটি একবার যুদ্ধ থেকে ডিকমিশন্ড হয়েছিল এবং অপর এক ইরাক ট্যুরে যাওয়ার প্রাক্কালে স্নিপার Chris Kyle’s এর দেখা হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ইরাক যুদ্ধে স্নিপার Chris Kyle’s যতটা প্রাউড,  তার ভাই কিন্তু তার ছিটেফোঁটাও নয়। কেন? কেন সে অশ্লীল গালি দিয়েছিল তার আপন ভাই কে এবং ইরাক যুদ্ধ কে।
এই হচ্ছে আমার উপলব্দি ছবিটি দেখে। আপনারাও যদি শুধু বিনোদনের জন্য ছবিটি না দেখে গভীর দৃষ্টিতে দেখেন, আমার বিশ্বাস ছবিটি থেকে আপনারা আরো অনেক সত্য টেনে আনতে পারবেন।
ছবিটিতে Chris Kyle’s হিসেবে অভিনয় করেছেন Bradley Cooper.

image

জয় পাক বীর্য, পাক বীর্যের জয়

কিছু কিছু বইয়ে, এবং অনেকের মুখে শোনেছি পাক বাহিনী কেন ৭১ এত বেশী ধর্ষন চালিয়েছে। তারা চেয়েছে বাংলাদেশী নারীদের গর্ভে ‘পাকি বীজ’ বপন করতে! কেননা, তারা মনে করত, যদি তারা বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ও, তারপরও তাদের বংশধারা অব্যাহত থাকবে ধর্ষিত নারীদের গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানদের মাধ্যমে।
এটি যদিও ইতিহাসের পাতায় সত্যায়িত নয়, তবে মনস্তাস্থিক দিক থেকে অবাস্তব বলে মনে হয় না। আর আজকের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেটি আরো বেশি বাস্তব হয়ে দেখা দিয়েছে।
আমার ইদানীং মনে হয়, পাক বাহিনীর সেই আখাংকা কিছুটা হলেও পুরন হয়েছে। ওরা কম কিংবা বেশি, একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বীজ এদেশের অসহায় নারীদের গর্ভে স্থাপন করে যেতে পেরেছে।
যদি প্রশ্ন করা হয় আমার এ ধারনার স্বপক্ষে কোন যুক্তি আছে কি, তবে বলতে পারি, হ্যাঁ, আছে। তবে কু যুক্তি নাকি সু-যুক্তি সেটি আমার পক্ষে বলা দুরুহ।

এখন আসা যাক, আমার যুক্তি প্রসংগে।
যতদুর জানি, ৭১ এর দিকে জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামুলক ছিল না, সতরাং কাগজ পত্রে কে পাকি বীর্য দ্ধারা ‘জন্মায়িত’ আর কে নয়- সেটা এক কথায়  ‘বেসম্ভব’। যদি বলা হয় শারীরিক সাদৃশ্য দেখে, তবে সেটাও বেসম্ভব, কারন সে দিনের ধর্ষনকারীদের কারো কারো নাম জানা থাকলেও চেহারা ছবি আজকের দিনে এসে প্রায় অজানা। (কেউ যদি মুক্তি যুদ্ধের উপর থিসিস করতে চান এবং আপাত কোন বিষয় পাচ্ছেন না, তারা এই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে পারেন)
তৃতীয় আরেকটি পথ খোলা অবশ্য আছে, যেটি আজকের দিনে অনেকেই পরম ধর্ম হিসেবে মানেন, সেই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, DNA পরীক্ষা। ব্যয় সাপেক্ষ এবং দীর্ঘমেয়াদী। সুতরাং আপাতত এটিও বেসম্ভব।
বাকী থাকল, আচার বৈশিষ্ট। শরীর বিদ্যার ভাষায় বংশ গতি বিদ্যা বা জেনেটিক ক্যারেকটারিষ্টিক।
আমার মনে হয়, এটি দিয়ে আপাতত কাজ চালানো যাবে। তার আগে আরেকটু কষ্ট করে কিছু প্রশ্ন উত্তর পর্বের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তেমন কঠিন কোন প্রশ্ন না, এই যেমন ধরেন প্রাইমারি ইস্কুলের ‘এক কথায় উত্তর দাও’ টাইপের।
তাহলে শুরু করা যাক-
প্র: পাকি’রা কি করত?
উ: অত্যাচার করত।
প্র: কেন করত?
উ: ঘৃণা করত বলে।
প্র: কেন ঘৃণা করত?
উ: তাদের কে শাসক হিসেবে মেনে না নেওয়ার কারনে।
প্র: তারা আর কি করত?
উ: দুঃখিত,  এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় দেওয়া সম্ভব নয়?
প্র: কেন?
প্র: এরা এমন সব পাপ করেছে যা এক কথায় বলা সম্ভব নয়।
প্র: যেমন?
উ: তারা সাধারণত যাদের সন্দেহ করত, তাদের ধরে নিয়ে যেত, পরে সারা রাত অত্যাচার করে মেরে কোথাও ফেলে আসত। মেয়েদের লাঞ্চিত করত। ঘর, এমন কি সারা গ্রামে আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারত।
প্র: তারা কি সাধারন ছিল নাকি উর্দি পড়া।
উ: উর্দি পড়া।
এখানেই থামি তাহলে, এইসব শিশু সুলভ প্রশ্ন করে বিরক্ত করতে চাচ্ছি না আর।
নিশ্চয়ই এতক্ষনে বুঝে গেছেন আমি কি বলতে চাচ্ছি।
যদি না হয়, তবে আরো কয়েকটি বাক্য যোগ করে আমার যুক্তি পর্ব শেষ করব।
পাকি’রা বিদায় নিয়েছে সেই কবে, ৭১-এর পাকি বীর্য’রা আজ বীর্যবান। গায় গতরে সাইজ ছোট হলেও নিজের বাপ’দের ঐতিহ্য বহন এবং সেটি রক্ষা করে যাচ্ছে পাক্কা ঈমানদার হিসেবে।
আজ ভৌগলিক সাধীন বাংলাদেশে পাকি বীর্য’রা আগুন দিয়ে অনিচ্ছাকৃত জন্ম নেওয়া সাধারন বাংলাদেশি মানুষদের পুড়িয়ে মারছে। উর্দিপরা পাকি বীর্য’রা রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে যাচ্ছে যাকে তাকে, পরের দিন ক্রসফায়ারে নিয়ে মারছে। উচ্চ শিক্ষায় নিতে আসা ভার্সিটি গুলোতে পাকি বীর্যরা লাঞ্চিত করেই যাচ্ছে দুর দুরান্ত থেকে পড়তে আসা টেলেন্টেড নিরীহ মেয়েদের।
আর সেই দেশে রাজকীয় ইয়াহিয়া’র বীর্যের উপস্থিতিইবা অস্বীকার করি কি করে? লম্পটশ্রেষ্ঠ পুরাতন সৈরাচার তার সৈনিক পোষাকের চকচকে ব্যাজের সাথে এনেছে বেইমানি’র এইডস।  সেটি দিয়ে সে পরে সংক্রমিত করেছে এককালিক ‘ফার্স্ট লেডি’কে!
সুতরাং- জয় পাক বীর্য, পাক বীর্যের জয়!
তাদের বীর্য এতই পাওয়ারফুল, সেটি যদি সেদিন জানা যেত, আজ বৃটেন সহ ইউরোপ জুড়ে যত স্পার্ম ব্যাংক আছে সব কটি আজ তৎকালীন পাকি বীর্যে পুর্ন থাকত।

হিন্দি ছবি PK এবং সৃষ্টিকর্তার একত্ববাদ

বেশ কিছুদিন আগে দেখা হয়েছিল হিন্দি ফিল্ম PK. ছবিটা যতটা না বিনোদনধর্মী তার চেয়ে বেশি তাত্ত্বিক। ধর্মীয় আচার, মন্দির আর পুরোহিত দ্ধারা সাধারনের ধর্মীয় বিশ্বাসের সুবিধাভোগীদের গালে বেশ বড় সর একটা চপেটাঘাত। আমার অনেকটাই বিশ্বাসের বাহিরে ছিল ভারতের মত ধর্মীয় আচার সর্বস্ব দেশে এরকম একটি ফিল্ম পর্দায় দেখানো হয়েছে। তার উপর প্রধান চরিত্র PK হিসেব যিনি অভিনয় করেছেন তিনি একজন মুসলমান। ধর্মীয় পুরোহিতরা ফিল্মটিকে হজম করতে দেখে বেশ অবাক লেগেছে। কোটি কোটি রুপি’র ব্যবসা যে মন্দির কে ঘিরে, সেই মন্দির ভক্তরা তুলনামূলক ভাবে কম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সেটা নির্ধিদায় বলা যায়। এটা অবশ্য ভাল লক্ষণ।
PK ফিল্মে যেটি মুখ্য হয়ে প্রদর্শিত হয়েছে সেটি হচ্ছে স্রষ্টার একত্ববাদ, যেটি ইসলামের মৌলিক শিক্ষা। ইসলামের এই একত্ববাদের কথাই আসলে এসেছে ফিল্মটিতে। যার কারনে ছবির ভিলেন ধর্মীয় গুরু PK’কে মুসলিম হিসবে ট্যাগ দিয়েছেন।
কিন্তু আমার কাছে যেটি দৃষ্টি কটু লেগেছে সেটি হচ্ছে হিন্দু খ্রীশ্চিয়ান ধর্মীয় অপ প্রথাকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, মুসলিম সমাজের মধ্যেকার অনেক অপপ্রথা বা অধর্মীয় অনাচারকে সেরকম ভাবে তুলে ধরা হয় নি। এটা কেন করা হয় নি, সেটি আমার বোধগম্য নয়। উত্তর হয়ত এমন হতে পারে যে, মুসলিম সমাজে অনেক অপ প্রথা থাকলেও সৃষ্টিকর্তার একত্ববাদের প্রতি কোন মুসলিমই অংশীদারিকে স্বীকার করে না, যদিও তারা ধর্মের নামে অনেক অপপ্রথা পালন করে।
কিন্তু এটি স্বীকার করে নিলেও পুরো ফিল্মে যে সকল বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, সে একই অপপ্রথা কিন্তু মুসলিমদের মধ্যে উপস্থিত। এখনো মুসলিম সমাজে মাজারকে ঘিরে যে সকল অপপ্রথা চালু আছে সেগুলো হিন্দু মন্দির বা দেবতা পুজার চেয়ে কম ঘৃণ্য নয়। লাল সালু ঠাংগিয়ে ব্যবসা তো মুসলিম সমাজের এক খুবই পরিচিত দৃশ্য। ভন্ড পীরদের দৌরাত্ম্য হিন্দু শ্রী গুরুদের চেয়েও অনেক নিম্নে। অথচ আমরা PK ফিল্মে সেই সকল দৃশ্যের দৃশ্যায়ন কম দেখি। আমার মনে হয় এখানে চাতুরীর আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।
আশা করি আগামীতে ‘PK-2’ তে (যদি নির্মান করা হয়) মুসলিম সমাজের মধ্যে প্রচলিত ভিবিন্ন অপপ্রথা গুলো আরো বেশি তুলে ধরে ধর্মীয় তাত্ত্বিকতার সামঞ্জস্য আনা হবে।

অলস মস্তিষ্ক উন্মাদনার কারখানা আর আমাদের যুবরাজ

স্কুলে পড়া কালে পড়ে ছিলাম, লুৎফর রহমানের ‘উন্নত জীবন’।  সেই প্রবন্ধেই সম্ভবত বলে ছিলেন, অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। তিনি যদি আজকে বেঁচে থাকতেন, তবে অবশ্যই তার প্রবন্ধের এই কথাগুলোর সম্পাদনা করতে হত। অন্তত আমাদের যুবরাজ তারেক রহমানের কিছুদিন পর পর মহান মহান বানী প্রসব করা দেখে, তাকে কিছুটা চিন্তায় ফেলে দিত।
বিলাতে তারেক রহমান আজ অনেকদিন হল,  ব্যক্তিগত ভাবে তিনি কি করেন, সেটা আমার জানার আগ্রহ কখনই ছিলনা, কিন্তু কিছুদিন পর পর কিছু অন্ধভক্ত আর সুযোগসন্ধানীদের সামনে তার মুখ দর্শন দেন। এই মুখ দর্শন দিয়ে তৃপ্তি হয়ত পুরোটা হয় না, তাই তিনি তার সাগরেদদের সামনে কিছু বানী প্রসব করেন, আর সেগুলো শুনে আমাদের ‘বিশিষ্ট জনে’রা পাছা দুলিয়ে বাহবা দেন। এ থেকে আমার ধারণা হয়েছে আসলে তিনি কিছুই করেন না; সারাদিন বাসায় বসে হয়ত হিন্দি সিরিয়াল না হয় ইস্টেন্ডার বা কর্নেশন স্ট্রিট দেখেন। শুনেছি কিছু পড়াশোনাও করেন,  কিন্তু আমার তাতে এখন ভীষন সন্দেহ। তার বক্তৃতা’র টপিক আর লেজেগোবরে কথামালা আমাকে অন্য একটি ধারনা দেয়! তিনি আসলে অলস সময় কাটান।
দুদিন আগে তার বক্তব্য পড়ে আমার সেই ধারণা আরো পাকাপোক্ত হয়েছে। 
অলস সময় কাটান বলেই এমন উদ্ভট উদ্ভট বানী উদগ্রীরন করেন।
আর যদি বুজে শোনে সজ্ঞানে এসব কথা বলে থাকেন, তবে নিন্দুকেরা যা বলে,  উন্মাদ, সেটার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
যুবরাজ,  আপনার বুঝা উচিৎ, আপনি এখন কি অবস্থানে আছেন, বংশের সুত্র ধরে যদি আপনি বাংলাদেশের মসনদে বসার ক্ষীণতম আশাও রাখেন, আপনার উচিৎ আরো সতর্ক থাকা, ভালোই তো ছিলেন, পর্দার আড়ালে বিলেতি আরাম আয়েশে! কি দরকার ছিল- পর্দার বাহিরে আসা? তাও আসলেনই যখন, তখন যে পর্দা আপনাকে এতদিন আড়াল রেখেছে, সেটাকে এখন ন্যাকড়া হিসেবে দেখেন কেন?
আপনি সরকারের সমালোচনা করেন, সেটা ঠিক আছে, কিন্তু স্বয়ং শেখ সাহেবকে যখন আপনার ন্যাকড়া দিয়ে ঝাড়তে যান, আপনার ভাবা উচিৎ,  সেটা আপনাকে মানায় কিনা? কারো সমালোচনা করার আগে আপনারা বুঝা উচিৎ আপনি সেই সমালোচনা করার যৌগ্যতা রাখেন কিনা।  এটা হচ্ছে সহজ বোধগম্য বিষয়। রাজনীতিবিদ হিসেবে আপনার কিছুটা শিক্ষা অবশ্যই ইতিমধ্যে এসেছে! আর যদি ভাবেন, এখানে বসে দেশের জন্য কিছুতো করতে পারব না, তখন একটু আউলা ঝাউলা কথা বলে নিজের অস্তিত্ব জানান দেই! এটাই কি আপনার ইচ্ছা? তাহলে, আমার আর কিছু বলার নেই! আপনার মত হাজার হাজার তথাকথিত এরকম রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের পথে ঘাটে মাইক নিয়ে রাজা উজির মারছে, আপনাকে একাই কেন দোষী বলব! দেশীয় রাজনীতির ঐতিহ্য বহন করার অধিকার আপনার নিশ্চয়ই আছে!
তাই বলছিলাম, বিলাতে এতদিন থেকেও আপনার কিছুই শেখা হল না, শুধু মাত্র এখানকার স্থায়ী অধিবাসী হওয়ার সুযোগ ছাড়া!
শেষ যে কথাটি বলে শেষ করব- সেটি হচ্ছে,  আপনার একটি মেয়ে আছে। বাংলাদেশে যদি রাজতন্ত্র অক্ষুন্ন থাকে, আজ হোক কাল হোক, আল্লাহ চাহে তো এই মেয়েও হতে পারে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী। আমার অনুরোধ,  আপনি আপনার এই সব উন্মাদনা থেকে ওকে সরিয়ে রাখবেন।  যদি ও’ এখানকার সামান্য কিছু রাজনীতিও আত্বস্থ করতে পারে, আমরা আশা করি, অন্তত একজন অপেক্ষাকৃত ভালো প্রধানমন্ত্রী পাব ভবিষ্যতে! প্লিজ, আমাদের এই স্বপ্নটা আপনি ভেংগে দিবেন না!